বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তে ফের গোলাগুলি: বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া
(last modified Sun, 18 Sep 2022 11:39:48 GMT )
সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২ ১৭:৩৯ Asia/Dhaka

বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে আজও গোলাগুলি চলছে। রোববার দুপুর ১২টার দিকেও দু’দফায় গুলির শব্দ শোনা গেছে। শুক্রবার রাতে ৩টি মর্টারশেল বিস্ফোরণে কয়েকজন হতাহত হওয়ার পর থেকে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে সীমান্ত এলাকায়।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) দিল মোহাম্মদ ভুট্টো জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতের ঘটনার পর থেকে আতঙ্কের মাত্রা বেড়েছে। রোববারও শোনা গেছে গোলাগুলির বিকট শব্দ, যা গত কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে চলছে।

শূন্যরেখায় বসবাসকারি রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, মিয়ানমার বারবারই শূন্যরেখায় আটকে থাকা রোহিঙ্গাদের সেখান থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করে আসছে। শুক্রবার মর্টারশেল ইচ্ছে করে নিক্ষেপ করেছে বলে মনে করছেন তিনি।

এর আগে শুক্রবার রাতে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত ও কয়েকজন আহতের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মিয়ানমারের কোনো নাগরিক যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে বিষয়েও সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে বিজিবির টহল দল।

ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়া মো

মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ফের তলব

এদিকে, বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে একের পর এক গোলা নিক্ষেপ ও হতাহতের ঘটনায় ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়া মোকে আবারো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছে ঢাকা। এ নিয়ে এক মাসের মধ্যে চারবার তলব করা হলো মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে।

ওবায়দুল কাদের

উস্কানিমূলক কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে

মিয়ানমারের মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনা উস্কানিমূলক কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ (রোববার) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের সীমানায় মিয়ানমারের মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনায় শুরুতেই বাংলাদেশ মিয়ানমারের কাছে জবাব চেয়েছিল এবং এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তখন মিয়ানমার জানিয়েছিল- মর্টারশেলটি ভুলক্রমে বাংলাদেশের সীমানায় গিয়ে পড়ে। ভবিষ্যতে তারা সতর্ক থাকবেন। আবারও একই ঘটনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইন ও প্রটোকলের আলোকে খতিয়ে দেখছে।

তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকগণ মনে করেন- বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের হামলার বিষয় নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সামরিক প্রস্তুতিও বাড়াতে হবে বাংলাদেশকে।

শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জাতিসংঘের

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি উদ্বেগের সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি লুইস গুয়েন। গতকাল গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সীমান্ত পরিস্থিতি রাখাইন থেকে উদ্বিগ্নের। জাতিসংঘ প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছে, মিয়ানমারের মিশনের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সত্যি বলতে কী পুরো ঘটনা স্পষ্ট নয়। যদিও ঘটনাস্থলে দেখবার অনুমতি নেই। তাই উভয় দেশকে শান্তি বজায় রাখতে অনুরোধ আমার।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ