ভোক্তা ঋণের সুদের হার বাড়লেও শিল্পঋণের বিষয়ে ঘোষণা নেই
নতুন মুদ্রানীতি: 'মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ছাড়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না'
চলতি সপ্তাহের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার পুরোপুরি তুলে নেওয়া হলো। এছাড়া নতুন মুদ্রানীতিতে ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়ানোরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ভোক্তাঋণের ক্ষেত্রে সুদহার ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। বর্তমানে ব্যাংকের সব ধরনের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে বেঁধে রাখা হয়েছে। এখন সেখানে ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়িয়ে ১২ শতাংশ পর্যন্ত করতে পারবে ব্যাংকগুলো। এর ফলে ব্যাংকগুলো এখন ভোক্তা ঋণের সুদহার বাড়াতে পারবে। তবে শিল্পঋণসহ অন্যান্য ঋণের ক্ষেত্রে সুদহার বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, অন্যান্য ঋণের বেঁধে দেওয়া সুদহার তুলে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন থাকবে। নতুন মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আমানতের সুদহার উন্মুক্ত করে দেওয়া ও ঋণ সুদহারে কিছুটা শিথিল করায় তা আমানতের সুদহার বাড়াতে সহায়তা করবে।
কিন্তু বর্তমানে দেশে মূল্যস্ফীতি যেখানে উঠেছে, তাতে ব্যাংকগুলোকে আমানতের সুদহারও বাড়াতে হয়। কিন্তু ঋণের সুদ নির্দিষ্ট থাকায় ঋণ ও আমানতের সুদের মধ্যে সমন্বয় করতে গিয়ে ব্যাংকগুলোকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এ জন্য ব্যাংকগুলো ঋণ ও আমানতের সুদহার তুলে নেওয়ার দাবি করে আসছিল। সামগ্রিক বিবেচনায় এবারের মুদ্রানীতিকে সতর্কমূলক বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ মো: মাজেদুল হক মনে করেন, শিল্পঋণসহ অন্যান্য ঋণের ক্ষেত্রে সুদহার বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা না দেওয়ায় মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এর ফলে মুদ্রানীতি বাস্তবায়নকে কঠিন করবে বলেই মন্তব্য এ অর্থনীতিবিদের।
এদিকে, সব মিলিয়ে মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ, যা গত জুনে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে ধরা হয়েছিল ১৮ দশমিক ২ শতাংশ।
অর্থাৎ চলতি অর্থবছর অর্থাৎ জুন নাগাদ ঋণের প্রবৃদ্ধি যেটা টার্গেট করা হয়েছে, সেটা গত অর্থবছরের ডিসেম্বরের প্রবৃদ্ধির চাইতেও বেশি প্রাক্কলন করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন এই মুদ্রানীতিতে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তাতে সেই লক্ষ্য অর্জনে যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন আরেক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর।
আর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব অজিৎ কুমার পাল মনে করেন, এবারের ঘোষিত মুদ্রানীতিতে মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, সমন্বয়ের বিকল্প নেই বলে মনে করেন সাবেক এই আমলা।#
পার্সটুডে/নিলয় রহমান/আশরাফুর রহমান/১৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।