তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাসে নববর্ষ উদযাপন:
পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ বাঙালির সার্বজনীন উৎসব: মঞ্জুরুল করিম খান
-
রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী
তেহরানে বাংলাদেশের নয়া রাষ্ট্রদূত বলেন: পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ বাঙালির সার্বজনীন উৎসব। গতকাল দূতাবাসে অনুষ্ঠিত পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী এ কথা বলেন। রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিণী ফারজানা নাসরিনের উপস্থিতিতে তিনি আরও বলেন: ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাই প্রাণের টানে এ উৎসব উদযাপন করে থাকে। এ উৎসব আমাদের ঐতিহ্য ধারণ করে, আমাদেরকে একতাবদ্ধ করে,আমাদের মন-মননকে অনুরণিত করে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সরকারের নানাবিধ উদ্যোগ এ উৎসবের মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
মঞ্জুরুল করিম খান আরো বলেন: সরকারের সার্বিক প্রচেষ্টায় মঙ্গলশোভাযাত্রাকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে পহেলা বৈশাখ আন্তর্জাতিক রূপ পেয়েছে, যা আমাদের জন্য অনেক গর্বের। এবারের পহেলা বৈশাখ পবিত্র রমজানে পড়ে যাওয়ায় নয়া রাষ্ট্রদূতের আগমনে গতকাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে 'আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর' গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। আলোচনায় অংশ নেন রেডিও তেহরানের সিনিয়র সাংবাদিক গাজী আবদুর রশীদ ও আমির হোসেন। আরও বক্তব্য রাখেন ডাঃ হেদায়েতুল্লা সাজু, দূতাবাসের প্রথম সচিব মোল্লা আহমদ কুতুবুদ-দ্বীন, মিনিষ্টার (কমার্স) ডক্টর জুলিয়া মঈন এবং রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব মোল্লা আহমদ কুতুবুদ-দ্বীন ও দূতালয় প্রধান ওয়ালিদ ইসলাম। রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিণী ফারজানা নাসরিন উপস্থিত সবাইকে স্বাগত ও বৈশাখি অভিনন্দন জানান।
বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত বলেন, জনগণ যাতে এ উৎসব আরও আনন্দের সাথে উদযাপন করতে পারে সেজন্য সরকার ভাতার ব্যবস্হা করেছে। তিনি নতুন প্রজন্মকে বেশি বেশি বাঙালি সংস্কৃতির বিভিন্ন ধারা চর্চার আহ্বান জানান এবং এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন।

আলোচনা পর্ব শেষে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দূতাবাসের কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যগণের অংশগ্রহণে এসো হে বৈশাখ গানের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা ও নির্দেশনা দেন রেডিও তেহরানের সিনিয়র সাংবাদিক নাসির মাহমুদ।
বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিভিন্ন দিক এ অনুষ্ঠানে ফুটিয়ে তোলা হয়। ঘেটু গান,কৌতুক, কবিতা, আবৃত্তি, ছড়া, কবিতার আঞ্চলিক সংস্করণ, সমবেত পুঁথিপাঠ এবং নাচ পরিবশেনের মধ্য দিয়ে উপভোগ্য হয়ে ওঠে বৈশাখি এই আয়োজন।

বাংলা গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন ইরানি শিল্পী সাবা। ঘেটু গান পরিবেশন করেন দূতালয় প্রধান ওয়ালিদ ইসলাম। কথোপকথনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত করে তোলেন দূতাবাসের প্রথম সচিব মোল্লা আহমদ কুতুবুদ-দ্বীন, দূতালয় প্রধান ওয়ালিদ ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক নাসির মাহমুদ ও নান্টু ইসলাম।
দূতাবাসের মিনিষ্টার (কমার্স) ডক্টর জুলিয়া মঈনের গান পরিবেশনা অনুষ্ঠানে অন্যরকম আবহ তৈরি করে। সাবেক সরকারি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান এবং দূতাবাসের প্রথম সচিব মোল্লা আহমদ কুতুবুদ-দ্বীনের কৌতুক পরিবেশনা ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ।

দূতাবাসের মিনিষ্টার (কমার্স) এর হাজবেন্ড অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে স্বাগত জানান
অনুষ্ঠানে নাসির মাহমুদের পরিচালনায় সমবেত অংশগ্রহণে পুঁথি পাঠ করা হয়। বুলেটিন পাঠ করেন সাংবাদিক নাসির মাহমুদ। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন সিনিয়র সাংবাদিক মুসা রেজা। রাষ্ট্রদূতসহ সমবেত অংশগ্রহণে ধনধান্য পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা গানের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর আগত ভদ্রমহিলাদের অংশগ্রহণে পিলো পাসিং খেলা অনুষ্ঠিত হয়। পিলোপাসিংয়ে বিজয়ীসহ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সকল শিশু কিশোরদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী এবং তাঁর সহধর্মিণী ফারজানা নাসরিন।
বাংলা নববর্ষ উদযাপনে বিশেষ আয়োজন ছিল দূতাবাস পরিবার, রেডিও তেহরান পরিবারসহ ইরানের বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির উদ্যোগে পিঠা পুলি উৎসব।
দূতাবাস প্রাঙনে আয়োজিত ওই উৎসবে অংশগ্রহণকারী সবাইকে পুরষ্কার প্রদান করেন রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্বলিত ডকুমেন্টরি প্রদর্শনীর মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।#
পার্সটুডে/এনএম/২৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।