প্রত্যাবাসন নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ কক্সবাজারে
মিয়ানমারে ফেরার দাবীতে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ; জাতিসংঘের দ্বৈত নীতির নিন্দা
প্রত্যাবাসন নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আজ বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে রোহিঙ্গারা। সকাল ১০ টার দিকে, ক্যাম্পের চার মোয়া নামক এলাকায় প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা প্রতিবাদ সমাবেশে অংশনেন।
রোহিঙ্গা তারানার (গান) এর মাধ্যমে শুরু হয় এ সমাবেশ। প্রত্যাবাসন নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবী তোলেন বক্তারা। বলেন, তাদের নিয়ে জাতিসংঘের দ্বৈত নীতি তাদেরকে হতাশি করেছে। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, রেশন কমিয়ে দেওয়া, প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুকদের রেশন বন্ধ করা খুবই রহস্যজনক। তাই তারা মিয়ানমারে ফিরতে মরিয়া। সে কারণে নাগরিকত্ব দিয়ে দ্রুত প্রত্যাবাসন জরুরি বলে দাবী করেন রোহিঙ্গা নেতারা।
এ সময় লম্বাশিয়া চৌরাস্তার মাথার সমাবেশ বক্তব্য রাখেন, রোহিঙ্গা নেতা ডা. জুবায়ের, মাস্টার শামসুল আলম মৌলভী নুর হোসেইন, মাস্টার কামাল ও মৌলভী ছৈয়দ উল্লাহ।
সমাবেশে রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী সৈয়দউল্লাহ বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমাদের নিজ দেশ মিয়ানমার। দুঃসময়ে বাংলাদেশ সহযোগিতা করেছে, বাঁচতে দিয়েছে। এখন নিজ দেশে অবশ্যই তাদের ফেরত নিতে হবে বলে দাবী জানান সৈয়দউল্লাহ। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক কমিউনিটিকে প্রত্যাবাসন সফল করতে বাংলাদেশের পাশে থাকতে হবে। তবে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন চায় না বলেও সংশয় প্রকাশ করেন নেতারা। দ্রুত মিয়ানমারে ফিরে যেতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতা দাবি করেন টেকনাফের জাদিমুড়া শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা বজলুল রহমান। তিনি বলেন, আমরা আর বাংলাদেশে থাকতে চাই না। দ্রুত নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই।
এদিকে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, আর শরণার্থী জীবন চাই না। সামনের দিনগুলোতে আমরাও আমাদের জন্মভূমি আরাকানে (রাখাইন) জীবনযাপন করতে চাই। বিশ্ব সম্প্রদায় আমাদের দেশে ফেরার ব্যাপারে যেন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়। এ বিষয়ে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপসচিব) খালিদ হোসেন গনমাধ্যমকে বলেছেন, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গারা দ্রুত প্রত্যাবাসনের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছে। সেখানে মিয়ানমারে ফিরে যেতে রোহিঙ্গারা কয়েকটি দাবি তোলেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। তখন সীমান্ত অতিক্রম করে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকেই এখানে ছিল আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা।#
পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/বাবুল আখতার/৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।