তিস্তায় আবারো বাড়ছে পানি, ডুবছে বাড়িঘর চরাঞ্চল, শঙ্কায় কৃষকরা
(last modified Sat, 26 Aug 2023 13:09:02 GMT )
আগস্ট ২৬, ২০২৩ ১৯:০৯ Asia/Dhaka

ভারতে গজলডোবার গেট খুলে দেওয়ায় উজান থেকে বাংলাদেশ অভিমুখে ধেয়ে আসছে তিস্তার পানি। অবিরাম বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের মতো নেমে আসা উজানের পানিতে এখন টইটম্বুর দেশের উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীগুলো। বিশেষ করে তিস্তা, ঘাঘট,ধরলা,ব্রহ্মপুত্র ও করতোয়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে বেড়েছে পানি। এতে রংপুর অঞ্চলের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে চরাঞ্চলে চাষ করা বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

পানিতে তলিয়ে গেছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল। কোথাও কোথাও হাঁটু পানিতে ডুবে আছে ঘর-বাড়িসহ উঠতি ফসল। সময়ে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে ওঠানামা করছে। দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলে বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানীর শঙ্কায় চিন্তিত কৃষকরা। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী,শনিবার দুপুরে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৯৭ সেন্টিমিটার ও দুধকুমারের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিনের গরমের পর টানা বৃষ্টি শুরু হয়। এতে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বেড়ে যায়। সেটি বেড়ে হাতীবান্ধার কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে নদী তীরবর্তী অনেকে নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেতসহ বহু বাড়িঘর। এছাড়া কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বেড়ে চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এদিকে,ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে গেট খুলে দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ।

তিস্তার পানি বাড়ায় পানি বৃদ্ধির কারণে লালমনিরহাটে জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা,কালিগঞ্জ ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ আবারও বন্যার কবলে পড়েছেন। এছাড়া ব্রহ্মপুত্র,ধরলা ও দুধকুমারের পানিও গত ২৪ ঘন্টায় বেড়েছে। নদ-নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হয়ে পড়ছে রাজারহাট, কুড়িগ্রাম সদর ও উলিপুর উপজেলার চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো। তলিয়ে গেছে জেলার বিভিন্ন এলাকার রোপা আমন ক্ষেত।

এমন পরিস্থিতিতে আবারো আলোচনায় ভারত বাংলাদেশের তিস্তা চুক্তির বিষয়টি। নদী স্বার্থ সংরক্ষন বিষয়ক সংগঠন রিভারাইন পিপলের পরিচালক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ মনে করেন, কূটনৈতিক ব্যর্থতায় সংকটের সমাধান আজও হয়নি। তবে এ বিষয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের আরো সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করে বলে মনে করেন ড. ওয়াদুদ। #  

পার্সটুডে/বাদশা রহমান/আশরাফুর রহমান/২৬