পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ঢাকায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ও ইসলামি ঐক্য সপ্তাহ (১২-১৭ রবিউল আউয়াল) উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘ইসলামের নবী (সা.): বিশ্বের মুসলমানদের ঐক্যের প্রতীক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার।
গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ রেযা মীরমোহাম্মাদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন আল-মুস্তাফা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশস্থ প্রতিনিধি হুজ্জাতুল ইসলাম শাহাবুদ্দিন মাশায়েখি রাদ ও গণভবন মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি মুহাম্মাদ সাইফুল কবীর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মু. আ. আউয়াল হাওলাদার বলেন, রাসুল ছিলেন প্রকৃতই মুসলিম জাতির একতার প্রতীক। তার মাধ্যমেই বিশ্ব থেকে জাহেলিয়্যাতর আঁধার দূর হয়ে বিশ্ব মানবতা ও ঐক্যের আলোয় আলোকিত হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত আমরা মুসলিমরা আজ রাসূল (সা) এর মানবিকতা, সততা ও ঐক্যবদ্ধতার শিক্ষা থেকে দূরে সরে এসেছি। লোভ ও দুনিয়াবি প্রাপ্তির সীমাহীন আকাঙ্খা আজ আমাদেরকে প্রবলভাবে গ্রাস করে রেখেছে। আমাদের উচিৎ রাসূলের শেখানো ঐক্যের পথে চলা, আর তা শুরু হওয়া উচিত আমাদের পরিবার থেকে। কারণ এভাবেই তা পরিবার থেকে সমাজ, সমাজ থেকে রাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়বে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি বলেন, পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রাসূল (সা.)-কে রাহমাতুল্লিল আলামীন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ রাসূল (সা) হলেন সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রেরিত পূর্ণাঙ্গ রহমতস্বরুপ, যার মধ্য দিয়ে আল্লাহ তার এই রহমত তাঁর সৃষ্ট প্রতিটি জীবের মধ্যে পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি বলেন, কোন বিশেষ জাতি বা যুগ নয়, বরং রাসুলের মাধ্যমে প্রেরিত এই রহমতের ধারা কিয়ামত পর্যন্ত সমগ্র মানবজাতির জন্য বহমান থাকবে
তিনি আরো বলেন, রাসূলের ব্যক্তিত্ব ও মর্যাদা এতটাই উঁচুতে ছিল যে অমুসলিমরাও তাঁর সততা ও বিশ্বস্ততা নিয়ে কখনো প্রশ্ন তুলতে পারে নি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তা বলেন, ইসলামি বিশ্ব হচ্ছে একই দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো বা একটি সমন্বিত পরিবারের ন্যায় যার শেকড় অনেক গভীরে এবং এর সংযোগ স্থাপনকারী শাক্তিশালী উপাদান রয়েছে যা কিনা এই বৃহৎ ধর্মীয় পরিবারকে সুদৃঢ় (সমন্বিত) ও শক্তিশালী করতে পারে এবং সদা-সর্বদা ও সর্বত্র একত্র রাখতে পারে।
রাসূলগণের এবং আল্লাহর মনোনীত ব্যক্তিদের সীলমোহর মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.) এর উজ্জ্বল ও বরকতময় অস্তিত্ব বিশ্বের সমস্ত মুসলমানদের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম যা সর্বশেষ ঐশি ধর্ম হিসেবে ইসলাম ও আসমানি কিতাব আল কুরআনের পাশাপাশি বিশ্বের সমস্ত মুসলমান ও ইসলামি উম্মার ধারাবাহিকতা ও স্থায়িত্বের স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত।
ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর নবুওয়তের ২৩ বছরে ইসলাম ধর্মের মূল কাণ্ডারী হিসেবে সবার জন্য যেসব পরামর্শ ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিয়ে গেছেন তাতে তাঁর আনুগত্য ও অনুসরণ করাই ইসলামি উম্মাহর ঐতিহাসিক ও অগ্রসরমাণ পথ চলার মূল কথা যা সকল বিভেদ ও বিভাজনকে দূর করতে সক্ষম।
বক্তারা বলেন,পবিত্র কুরআনে সর্বশক্তিমান আল্লাহর বাণী অনুসারে একজন প্রকৃত মুসলমানকে ইসলামের নবীর আনুগত্য করার জন্য অবশ্যই কাফেরদের সাথে কঠোর এবং তার একই ধর্ম অনুসারীদের সাথে সদয় ও বিনম্র হতে হবে। বক্তারা আরো বলেন, আজ বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে তা মোকাবেলায় মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৩০