রামপাল আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে কোনো ঐক্য নয়: আনু মোহাম্মাদ
-
অধ্যাপক আনু মোহাম্মাদ
বাংলাদেশের সুন্দরবনের কাছে রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে জাতীয় বিতর্কের এ পর্যায়ে আজ তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল ও সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না।
তবে এই প্রকল্প পুনর্বিবেচনা করা হলে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি আলোচনাতে রাজি আছে বলে জানিয়েছে জাতীয় কমিটির নেতারা।
আজ(সোমবার) সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টন মুক্তি ভবন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তেল–গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেছেন, রামপাল প্রকল্প বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তারা দুর্বার আন্দোলন চালিয়ে যাবে। তিনি বলেন, গণজাগরণ সৃষ্টি করে আন্দোলনকে আরও বেগবান করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলন নিয়ে বিষোদ্গার করেছেন। নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ১০ বছর আগে যখন বিএনপি-জামায়াত সরকার দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে গুলি চালিয়েছিল, সাধারণ মানুষ তখন ব্যাপক গণজাগরণ তৈরি করেছিল। আওয়ামী লীগ সেই আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছিল। সে সময় বর্তমান সরকারের মতোই তৎকালীন সরকার ‘থলের বিড়াল তত্ত্ব’ হাজির করেছিল। আন্দোলন নিয়ে নানা কুৎসা রচনা করেছিল। সরকারে থাকলে একই দলগুলোর ভূমিকা সম্পূর্ণ বিপরীত হয় বলে তিনি মন্তব্য করেন। গুলি, লাঠি, টিয়ার গ্যাস, হামলা, নির্যাতন, কুৎসা—কোনো কিছুই তারা বাদ দেয় না। বর্তমান সরকারের ভূমিকাও এর প্রমাণ।
আনু মোহাম্মদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনের প্রতি কটাক্ষ করে প্রশ্ন তুলেছেন, এত আন্দোলনের খরচ কে জোগান দেয়? প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন,‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি যখন আমাদের ফুলবাড়ী আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন, তখন আমরা যেভাবে খরচ জোগাড় করতাম, এখনো সেভাবেই জোগাই।’
সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন জনগণের বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘অসংখ্য মানুষের ঘামে–শ্রমে এই আন্দোলন গড়ে উঠেছে। ক্ষমতায় থাকা বড় দলগুলোর মতো আমাদের আন্দোলন টাকার ওপর ভরসা করে না। কারও পৃষ্ঠপোষকতার তোয়াক্কা করে না। আপনাদের কাছে এগুলো অবিশ্বাস্য মনে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের বিভিন্ন বাম রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বি ডি রহমতউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানজিমউদ্দিন খান, মোসাহেদা সুলতানা, নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে উন্মুক্ত বিতর্কে অংশ নেয়ার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। রবিবার এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে জানান ‘আমরা বিদ্যুৎ চাই। কিন্তু তা কোনোভাবেই সুন্দরবনকে ধ্বংস করে নয়। বিদ্যুৎ প্রকল্প রামপাল থেকে সরিয়ে অন্যত্র করা সম্ভব।“#
পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/গাজী আবদুর রশীদ/২৯