টাকা জমা দিয়েও ৭১ হাজার বাংলাদেশির হজ অনিশ্চিত, হাবের হুঁশিয়ারি
বাংলাদেশ থেকে হজ করতে ইচ্ছুক ধর্মপ্রাণ হাজার হাজার মানুষ এ বছর প্রাক-নিবন্ধন এবং হজের টাকা জমা দিয়েও কোটা জটিলতার কারণে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। গতকাল ২০ মার্চ ছিল এ বছরের প্রাক-নিবন্ধনের টাকা জমা নেয়ার শেষ তারিখ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত হজ কোটার অতিরিক্ত প্রায় ৭১ হাজারের বেশি প্রাক-নিবন্ধন হয়ে গেছে।
চলতি বছর সরকারি পর্যায়ে তিন হাজার ৩৪৯ জন ও বেসরকারি পর্যায়ে এক লাখ ৮৫ হাজার ৫০৩ জন প্রাক-নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া গত বছরের ৩৭ হাজার ৪৫০ জন প্রাক-নিবন্ধনকারী রয়েছেন হজে যাওয়ার অপেক্ষায়। কোটা জটিলতার কারণে তারা হজে যেতে পারেননি।
২০১৭ সালে সৌদি সরকারের সঙ্গে হজ চুক্তি অনুযায়ী এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার এবং বাকিরা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানান, ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রাক-নিবন্ধনকারীর সংখ্যা দুই লাখ ৮৮ হাজার ৪০৯ জন হয়েছে।
ইতোপূর্বে ধর্ম মন্ত্রণালয় এক সার্কুলারে জানিয়েছে, হজে যেতে পারবে না জানা সত্ত্বেও কোনো এজেন্সি প্রতারণা করে টাকা নিলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

এ প্রসঙ্গে, হজযাত্রী ও হাজী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আবদুল্লাহ আল নাসের বলেছেন, নির্দিষ্ট কোটার বাইরে হজে যাওয়ার জন্য প্রাক-নিবন্ধন করেছেন অনেক বেশি মানুষ। অথচ তারা এ বছর হজে যেতে পারছেন না। কিন্তু নিবন্ধনের নাম করে দালালরা অনেকের কাছ থেকে দুই-আড়াই লাখ টাকা প্রতারণা করে নিয়েছে। তিনি দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি মোহাম্মদ ইবরাহিম বাহার বলেন, যারা নিবন্ধন করেও হজে যেতে পারছেন না তাদের কাছে থেকে নিবন্ধন ফির বাইরে কোনো টাকা নেয়া যাবে না। প্রতারণা করে টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে হাব ব্যবস্থা নেবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল জলিল বলেন, কোনো হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রাক-নিবন্ধিতদের মধ্য থেকে সবাই এবার হজে যেতে পারবেন না। তবে যারা এবার যেতে পারবেন না তাদের আগামী বছর অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
এদিকে, চলতি বছর হজের প্রাক নিবন্ধনে অনিয়মের তদন্ত চলছে। আলাদা তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুইটি কমিটি করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও অন্যটি ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২১