রংপুরের পল্লী নিবাসেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন এরশাদ
নেতা-কর্মীদের দাবির মুখে অবশেষে নিজ বাসভবন রংপুরেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
আজ (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টা ৫৩ মিনিটে রংপুরে গ্রামের বাড়ি পল্লীনিবাসের লিচু বাগানে বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে চতুর্থ ও শেষ জানাজার নামাজ শেষে দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ তার মরদেহ বহনকারী গাড়ি নিয়ে সাড়ে ৪টায় পল্লীনিবাসে পৌঁছান।
সেখানে মরদেহ পৌঁছানোর পর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এরপর সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে মরদেহ দাফনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। প্রথমে এরশাদকে গান ক্যারেজে বহন করে কফিন কবরের পাশে নেয়া হয়। এরপর জাতীয় পার্টি প্রধানের জীবন বৃত্তান্ত পড়ে শোনানো হয়। এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে শুরু হয় দাফন প্রক্রিয়া। সেখানে উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্য কবরের পাশে অবস্থান নেয়।

সেনা সদস্যদের তত্ত্বাবধানে এরশাদের দাফন প্রক্রিয়ায় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও এরশাদের ভাই জিএম কাদের ও তাদের আত্মীয় স্বজন এবং দলের সিনিয়র নেতারা।
এরশাদের ছোটভাই ও পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, রংপুর সিটি মেয়র ও জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, এরশাদপুত্র স্বাদ ও এরিকসহ পার্টির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষ দাফনকার্যে অংশ নেন। দাফন শেষে এরশাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতারা এরশাদকে ঢাকার সামরিক কবরস্থানে দাফনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে জাতীয় পার্টি রংপুর শাখা তাদের প্রিয় নেতাকে এরশাদের গ্রামের বাড়ি পল্লীনিবাসে দাফনের ঘোষণা দেয়।

এর আগে রংপুরের কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে মরদেহ বহনকারী গাড়ি আটকে দেয়া হয়। এ সময় জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিয়ে এরশাদকে রংপুরে দাফনের দাবি জানান। এ অবস্থায় রংপুরের মানুষের ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পল্লীনিবাসেই এরশাদকে দাফন করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় পার্টি।
এদিকে,এইচএম এরশাদের দাফন রংপুরে হওয়ায় সিদ্ধান্তকে রংপুরবাসীর বিজয়ী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তার সাবেক স্ত্রী বিদিশা। আজ পৌনে বিকেল তিনটার দিকে নিজের ফেসবুক পেইজে এক স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন ‘রংপুরবাসীর বিজয়। হেরে গেলেন ষড়যন্ত্রকারীরা।’
রোববার সকালে সাবেক সেনাশাসক এরশাদ শেষ ইন্তেকাল করেন। ৮৯ বছর বয়সী এরশাদ দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। গত ২৬ জুন শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। গত ৪ জুলাই থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/আবদুর রহমান খান/১৬