যশোরে তিন কিশোর নিহত: দুর্নীতি ও মাদক ব্যবসাকেই দায়ী করছেন নাগরিক সমাজ
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i82295-যশোরে_তিন_কিশোর_নিহত_দুর্নীতি_ও_মাদক_ব্যবসাকেই_দায়ী_করছেন_নাগরিক_সমাজ
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দি তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
(last modified 2025-10-12T12:48:31+00:00 )
আগস্ট ১৫, ২০২০ ২০:৩৯ Asia/Dhaka

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দি তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বন্দি কিশোরদের খাদ্য ও চিকিৎসা নিয়ে কর্তৃপক্ষের ব্যাপক দুর্নীতি ও বন্দিদের মাঝে মাদকের ব্যবসা এ ঘটনার পেছনে দায়ী বলে জানিয়েছে স্থানীয় নাগরিকসমাজ। গতবছরও এখানে  এরকম একজন কিশোর বন্দীকে পিটিয়েকে হত্যা করা হয়। এ প্রসংগে যশোরের আঞ্চলিক পত্রিকা লোকসমাজ-এর সম্পাদক আনোয়ারুল কবির রেডিও তেহরানকে জানিয়েছেন, নাম শিশুউন্নয়ন কেন্দ্র হলেও  এটি মূলত কিশোর অপরাধীদের কারাগার বা সংশোধনাগার। খুন বা ধর্ষনের মতো অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত থাকার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বা বিচারাধীন এমন কিশোর অপরাধীদের  এখানে আটক রাখা হয়েছে। এ  হত্যাকান্ডের নেপথ্য প্রসঙ্গে টেনে তিনি জানান, এখানে  খাবার ও চিকিৎসার দুর্নীতি ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে বন্দিদের আন্দোলন থামাতেই এমন বর্বরতার আশ্রয় নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাটে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়, আহত হয় আরও অন্তত ১৫ জন। এ ঘটনায় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ও এক কিশোরসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এ ঘটনা তদন্তে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদপ্তর দুইটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে আহত কিশেরদের কয়েকজন পুলিশকে বলেছে, বৃহস্পতিবার (১৩ আগষ্ট) দুপুরে কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আনসার সদস্য ও তাদের নির্দেশে কয়েকজন বন্দী অন্তত ১৮ জন বন্দী কিশোরকে বেধড়ক মারপিট করে।

মারপিট ও নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের ফেলে রাখা হয়। কয়েকজন অচেতন থাকায় তারা অজ্ঞান হয়ে গেছে মনে করলেও পরে তারা বুঝতে পারে এরা মারা গেছে। এরপর সন্ধ্যার পর এক এক করে তাদের লাশ হাসপাতালে এনে রাখা হয়।

নিহত তিন কিশোর হলো, বগুড়ার শিবগঞ্জের তালিবপুর পূর্বপাড়ার নান্নু প্রামানিকের ছেলে নাঈম হোসেন (১৭), একই জেলার শেরপুর উপজেলার মহিপুর গ্রামের আলহাজ নুরুল ইসলাম নুরুর ছেলে রাসেল ওরফে সুজন (১৮) এবং খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা পশ্চিম সেনপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান রাব্বি (১৮)। শুক্রবার কোতোয়ালি থানায় এ নিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন নিহত পারভেজ 

হাসান রাব্বির (১৮) বাবা খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা বাসিন্দা রোকা মিয়া। মামলায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে বিবাদী করা হয়েছে। 

পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-মহা পরিদর্শক একেএম নাহিদুল ইসলাম বলেছেন, “সংঘর্ষ নয়, এক পক্ষের হামলায় এ ঘটনা ঘটেছে। আহত কিশোরদের কথাই সত্য।” এদিকে এ ঘটনায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে যশোর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, ১০ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে পাঁচজনের সংশ্লিষ্টতার সত্যতা মিলেছে।এজন্য ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তারা হলেন-তত্ত্বাবধায়ক (সহকারী পরিচালক) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহ, সাইকো সোস্যাল কাউন্সিলর মুশফিকুর রহমান, ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর শাহানূর এবং ওমর ফারুক। উল্লেখ্য অপরাধী বালকদের জন্য দেশে দুটি কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র রয়েছে। এর একটি গাজীপুরের টঙ্গিতে, অন্যটি যশোর শহরতলির পুলেরহাটে। যশোর কেন্দ্রে  কিশোর বন্দির মোট সংখ্যা ২৮০ জন বলে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।#

 

পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/বাবুল আখতার/১৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।