হাটহাজারী থেকে পদত্যাগের একদিন পর মারা গেলেন হেফাজতের আমির আহমদ শফী
-
শাহ আহমদ শফী
চট্টগ্রামের আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর সদ্যপদত্যাগকারী মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর আমির শাহ আহমদ শফী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে তিনি রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন।
আহমদ শফীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সন্ধ্যায় এক শোকবার্তায় মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘আল্লামা শফী দেশে-বিদেশে ইসলামের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদকে হারাল।‘ তিনি মরহুম আহমদ শফীর রুহের মাগফেরাত কামনা করেন ও তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
অপর এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলামের আমিরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আহমদ শফী দেশে ইসলামী শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। পাশাপাশি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়নেও ভূমিকা রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

এর আগে আজ বিকেলে শাহ আহমদ শফীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় আনা হয়। ঢাকায় আজগর আলী হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১০৫ বছর বয়সী দেশের শীর্ষ কওমি আলেম আহমদ শফী ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। এর আগেও কয়েকবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল।
টানা দুইদিনের ছাত্র বিক্ষোভের মুখে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হাটহাজারী মাদ্রাসার শুরা কমিটির সভায় আহমদ শফী মহাপরিচালকের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তার ছেলে আনাস মাদানীকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতিও দেওয়া হয়। বৈঠকের পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয় তাকে এবং তার চিকিৎসায় মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে আজ শুক্রবার বিকেলে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় আনা হয়।

শাহ আহমদ শফীর জন্ম চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পাখিয়ারটিলা গ্রামে। তার দুই ছেলের মধ্যে আনাস মাদানী হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক। অন্যজন মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ পাখিয়ারটিলা কওমি মাদ্রাসার পরিচালক।
১৯৮৬ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদে যোগ দেন আহমদ শফী। এরপর থেকে টানা ৩৪ বছর ধরে তিনি ওই পদে ছিলেন। আহমদ শফী ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির নির্বাচিত হন।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।