ঢাকায় ১০ বাসে আগুনের ঘটনায় ৯ মামলা, গ্রেফতার ২০, ‘পূর্বপরিকল্পিত’ বললেন ফখরুল
বাংলাদেশের রাজধানীতে বৃহস্পতিবার ১০টি বাসে অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার ঘটনায় পল্টন, মতিঝিল, শাহবাগ, ভাটারা, বংশাল ও উত্তরা পূর্ব থানায় মোট নয়টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ (শুক্রবার) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও গণসংযোগ শাখার উপকমিশনার (ডিসি) ওয়ালিদ হোসেন জানান, ‘পল্টন, মতিঝিল, শাহবাগ, ভাটারা, বংশাল ও উত্তরা পূর্ব থানায় মোট নয়টি মামলা হয়েছে। বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে এসব মামলা হয়েছে। এসব মামলায় মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে নয়াপল্টনে, গুলিস্তান, আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে, সচিবালয়ের উত্তর পাশে, পুরান ঢাকার নয়াবাজারে, পল্টন, মতিঝিল ও ভাটারায় নয়টি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর রাত পৌনে ৮টার দিকে উত্তরার আজমপুরে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়া হয়।

আগুনে পুড়ে যাওয়া বাসের মধ্যে তিনটি সরকারি। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, দুপুর ১২টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উত্তর পাশে পার্ক করে রাখা একটি সরকারি বাসে প্রথম আগুন দেওয়া হয়। সবশেষ বিকেল সাড়ে চারটায় ভাটারা এলাকায় আরেকটি বাসে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, দুর্বৃত্তরা যাত্রীবেশে বাসগুলোতে আগুন লাগিয়ে দ্রুত পালিয়ে গেছে। যেসব বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, তাতে ৩ জন থেকে সর্বোচ্চ ১২ জন যাত্রী ছিল।
হঠাৎ কী কারণে এতগুলো বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটল, সে বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি ঘটনা একইভাবে ঘটেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। একাধিক ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। তাতে কয়েকজনের চেহারা পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে। অগ্নিসংযোগকারীদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে, গণপরিবহনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই ন্যক্কারজনক ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক। বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতি দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি দলের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি মনে করে ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ–১ আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ন্যক্কারজনক ভোটাধিকার হরণের চিত্র আড়াল করার লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের দিয়ে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এসব দুষ্কর্মের মাধ্যমে সরকার আগের মতোই বিএনপিকে হেয়প্রতিপন্ন করা এবং এর দায়দায়িত্ব বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর চাপিয়ে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা করে হয়রানি করতে চায়।
এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে বিএনপি কখনোই জড়িত নয় দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসের রাজনীতিতে নয়, বরং জনগণের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে রাজনীতি করে। তাই সরকারের এই হীন ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত না হতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে তিনি সরকারকে এই হীন রাজনীতির পথ পরিহার করে স্বচ্ছ রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসার আহ্বান জানান।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৩