করোনা সংকট: ১৮ দফা নির্দেশনা মানতে নারাজ বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার সম্প্রতি ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। এর মধ্যে অন্যতম নির্দেশনা হচ্ছে জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সকল সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, প্রতিষ্ঠান ও শিল্পকারখানা ৫০ শতাংশ জনবল দিয়ে চালাতে হবে।
তবে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকেদের দু’টি সংগঠন বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ গতকাল জানিয়েছে, তারা ৫০ শতাংশ নয়, শতভাগ শ্রমিক নিয়েই কারখানায় উৎপাদন চালাবে।
এ ব্যাপারে তাদেরকে সরকারের পক্ষ আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, অর্ধেক জনবল নিয়ে কারখানা চালানোর নির্দেশটি দেশের প্রধান রপ্তানি আয়ের খাতে কার্যকর হবে না। তবে কারখানাগুলোতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম গতকাল সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনা ইতোমধ্যে শ্রম অধিদপ্তর এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত। এর ব্যতিক্রম কিছু হলে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন-এর সভাপতি আবুল হোসাইন রেডিও তেহরানকে বলেন, শ্রমিক কাজ করে নিয়মমাফিক ন্যায্য মজুরী পাবে এটা তাদের মূল দাবি। তাদের কর্মস্থলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার দায়িত্ব কারখানা মালিকদের। সরকারকে এ ব্যাপারে নজরদারী করতে হবে। আর করোনা সঙ্কটের নামে তাদের যেন কর্মহীন হতে না হয়, যেন অনাহারে থাকতে না হয় সেটি দেখার দায়িত্ব মালিক ও সরকার পক্ষের।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস তৈরি পোশাক রপ্তানি। মোট রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশ আসে এ খাত থেকে। জুলাই-সেপ্টেম্বরে মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৬ শতাংশ এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে।
ইতোমধ্যে, করোনার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় পোশাক খাতকে সহায়তা করতে সরকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এগুলো বাস্তবায়নের পাশাপাশি সরকার থেকে অন্যান্য সহযোগিতাও দেয়া হচ্ছে।
এদিকে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সূত্র জানায়, পোশাক রপ্তানির উৎপাদন সক্ষমতা এখন ৬০ শতাংশের বেশি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। আগে এ সময়ে শতভাগ লাগানো যেত। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
বিজিএমইএ গতকাল এক নির্দেশনায় বলেছে, করোনার প্রথম ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রথম ধাক্কায় পোশাক শিল্পে করোনা সংক্রমণের হার ছিল দশমিক শূন্য তিন শতাংশ। আশা করা যায়, করোনার প্রথম ঢেউয়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৩১