বাংলাদেশে মে দিবস পালিত, লকডাউনে কর্মহীন মানুষের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ
শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দাবিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও আজ পালিত হয়েছে মহান মে দিবস। করোনা পরিস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক চাকুরিচ্যুত শ্রমিক এবং ‘লকডাউন’-এর কবলে পড়ে কর্মহীন হয়ে পড়া অগণিত দরিদ্র মানুষদের প্রতি বিশেষ সহমর্মিতা প্রকাশ করা হয় এ দিবসটিতে।
করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবারের মে দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শ্রমিক অঞ্চলে এ উপলক্ষ্যে লাল-পতাকা র্যালি, সমাবেশ, আলোচনা সভা ও গণসংগীতের আয়োজন করা হয়।
শ্রমিক নেতারা জানান, আনুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের জন্য আট ঘণ্টা কাজ ও ন্যায্য মজুরি দাবির পাশাপাশি তারা এবার অপ্রতিষ্ঠনিক খাতের শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে করোনাকালীন চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং আপদকালীন খাদ্য ও নগদ অর্থ সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন।
আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে এবার মহান মে দিবস পালিত হওয়ায় শ্রমিকের অধিকার দাবির সাথে সাথে মজুরি ও বোনাসসহ অন্যান্য সুবিধা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন শ্রমিক নেতারা।
তাছাড়া, সম্প্রতি চট্টগ্রামের বাশঁখালিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গুলি করে শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ীদের শাস্তি প্রদান এবং নিহত ও আহত শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।

মহান মে দিবস পালন উপলক্ষে জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো দিনটি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ও টক শো সম্প্রচার করছে।
দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, ‘কোভিড-১৯ সংক্রমণজনিত মহামারিতে বিশ্ব আজ বিপর্যস্ত। বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াল থাবা আঘাত হেনেছে। ফলে গভীর সংকটে পড়েছে শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ দেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ। এ পরিস্থিতিতে সরকার জনগণের পাশে থেকে ত্রাণকাজ পরিচালনাসহ সর্বাত্মক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সরকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তাই কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমি সরকারের পাশাপাশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকগণকেও শ্রমজীবী মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে বলেছেন, মহান মে দিবস বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের ঐক্য ও সংহতির প্রতীক। এই ঐতিহাসিক দিনে তিনি বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সব মেহনতি মানুষকে শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াল পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সরকার শ্রমজীবী মানুষের পাশে থেকে ত্রাণ বিতরণসহ সর্বাত্মক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সরকার সংকট মোকাবিলায় শ্রমিকদের বেতনের জন্য ৮ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।’#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন