আন্তঃজেলা বাস চালুর দাবি
বাংলাদেশে আকস্মিকভাবে ফেরি চলাচল বন্ধের নির্দেশনায় যাত্রীদের দুর্ভোগ
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আসন্ন ঈদে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে পথে পথে। এরইমধ্যে আকস্মিকভাবে আজ (শনিবার) সকাল থেকে পদ্মা নদী পারাপারের ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশনা জারী হয়েছে। এ কারণে হাজার হাজার যাত্রী মাঝপথে আটকা পরে চরম দুর্ভোগের কবলে পড়েছেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনায় সারাদেশে লকডাউন চলছে। এরই মধ্যে মাত্র দুটি ছোট ফেরি দিয়ে এতদিন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার করা হয়। তবে ঈদ উপলক্ষে শুক্রবার থেকে এই নৌপথে যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। এসময় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যাত্রীরা ফেরিতে গাদাগাদি করে উঠে পড়ে। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায় বলে দিনের বেলায় ফেরী চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ আজ সকাল থেকে ফেরি বন্ধ রাখার বিষয়টি অন্তত গতকাল শুক্রবার থেকে জানানো জরুরি ছিল। তাহলে যাত্রীরা এভাবে ঘাটে আসতেন না আর ভোগান্তিতেও পড়তে হতো না।
শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিএ'র নৌ ট্রাফিক ব্যবস্থাপক সাহাদাৎ হোসেন জানান, কর্মস্থল ত্যাগ করার বিষয়ে সরকারিভাবে বারণ থাকলেও ঈদকে সামনে রেখে দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষের সকাল থেকেই শিমুলিয়া ঘাটে আসতে শুরু করে। সকালে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপের কারণে শিমুলিয়ায় পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে মাইকিং করে ঘাট ত্যাগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়। অনেক যাত্রী ফিরে গেলে হাজার হাজার নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ যাত্রী ফেরি চালু হবে এমন আশা নিয়ে ঘাটে অবস্থান করতে থাকে।
তিনি জানান, সকালে বাংলাবাজার থেকে কুঞ্জলতা নামের ফেরিটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে শিমুলিয়া ঘাটে আসে। তখন যাত্রীরা জোর করেই ফেরিতে উঠে পড়ে। ফেরী ছাড়তে না চাইলে এক পর্যায়ে তারা ফেরির ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করে। তখন বাধ্য হয়ে ফেরিটি শুধু যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া ঘাট ছেড়ে যায়।
যাত্রীদের এমন মারমুখি আচরণে বাধ্য হয়ে সকাল ৯টা, দুপুর ১২ টা এবং দুপুর ১ টায় তিনটি ফেরি শিমুলিয়া ঘাট ছেড়ে বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

আন্তঃজেলা বাস চালুর দাবি
চলমান চতুর্থ দফা লকডাউনের মধ্যেই গণপরিবহন খুলে দেওয়া হলে আন্তঃজেলা বাস (দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন) চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট মালিক-শ্রমিকের মধ্যে।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন আজ (শনিবার) বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন ডেকে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন চালু করার দাবি জানিয়েছে।
তাদের দাবি মানা না হলে ঈদের দিন ধর্মঘট করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে মালিক- শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। তিনি বলেন, সরকার দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে কিন্তু তাতে কোনো লাভ হচ্ছে বলে আমরা মনে করি না। মিনিবাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, এমনকি ট্রাকে গাদাগাদি করে মানুষ গন্তব্যে ফিরছে। এতে সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মালিক-শ্রমিকদের দাবি হচ্ছে- অবিলম্বে (ঈদের আগেই) দূরপাল্লার গণপরিবহন খুলে দিতে হবে। যদি এই দাবি মানা না হয় তাহলে ঈদের নামাজ শেষে সারাদেশের মালিক ও শ্রমিকরা নিজ নিজ এলাকার বাস-ট্রাক টার্মিনালে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে। এছাড়া ঈদের পর থাকবে আরও কঠোর কর্মসূচি।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন