জামিন নামঞ্জুর, 'আমার দেশ'র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে প্রেরণ
(last modified Sun, 29 Sep 2024 06:02:50 GMT )
সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪ ১২:০২ Asia/Dhaka
  • আদালতে মাহমুদুর রহমান
    আদালতে মাহমুদুর রহমান

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় 'দৈনিক আমার দেশ' পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। আজ (রোববার) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হক এ আদেশ দেন

আদালত প্রাঙ্গণে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নিজেদের মেরুদণ্ড সোজা রাখতে হবে। মেরুদণ্ড সোজা রাখবার জন্য আমি এসেছি। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আজকে আত্মসমর্পণ করেছি। এ লড়াই অব্যাহত থাকবে। এ মামলা পুরোটাই সাজানো। তৎকালীন সরকার ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থা চালু রাখতে আমার বিরুদ্ধে এ মামলা করেছে।’

মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ‘আইনে যেটা আছে, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী আমি আত্মসমর্পণ করব। আমার লড়াই অব্যাহত রাখব। যদিও এই মামলা মিথ্যা এবং একটা উদ্ভট ব্যাপার। আমার লড়াই অব্যাহত থাকবে।’

মাহমুদুর রহমানের আইনজীবী সৈয়দ জয়নাল আবেদিন মেজবাহ জানিয়েছেন, ‘আজ সকালে এ মামলায় আত্মসমর্পণ করতে আদালতে আসেন মাহমুদুর রহমান। এ সময় তার পক্ষে আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে তাকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ারও আদেশ দেওয়া হয়েছে।’ 

জয়নাল আবেদিন মেজবাহ আরও বলেন, ‘এবার অতি দ্রুত ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করা হবে। সেই সঙ্গে জামিনের আবেদনও করা হবে।’

নথি থেকে গেছে, সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন—জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভুইয়া।

এজাহার থেকে জানা গেছে, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যেকোনো সময় থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে শেখ হাসিনার ছেলে ও তার প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। এ অভিযোগ এনে ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান।

২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

মাহমুদুর রহমান গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে তুরস্ক থেকে দেশে ফিরেছেন। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে তাঁকে বিপুল সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এক সময় বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বিএনপি সরকারে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এসব দায়িত্ব পালন শেষে মাহমুদুর রহমান সাংবাদিকতায় নিজেকে যুক্ত করেন। বিগত সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের বিরুদ্ধে— আমার দেশ পত্রিকায় লেখনির কারণে মাহমুদুর রহমানকে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নির্মম নির্যাতন করা হয়। তিনি বিগত সরকারের সব অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার ও আপোষহীন ছিলেন।#

পার্সটুডে/এমএআর/২৯

ট্যাগ