আমরা ভেতরে ভেতরে দুঃখ পেলেও কেন্দ্রের নীতি অনুসরণ করি: বাংলাদেশ ইস্যুতে মমতা
-
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, অন্য দেশের বিষয় হওয়ায় এই এটি নিয়ে তিনি মন্তব্য করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না।
আজ (বৃহস্পতিবার) পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বাংলাদেশ একটি ভিন্ন দেশ। ভারত সরকার এটা দেখবে। এটা আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। আমাদের এটি নিয়ে কথা বলা বা হস্তক্ষেপ করার কথা নয়। আমরা ভেতরে ভেতরে দুঃখ পেলেও কেন্দ্রের নির্ধারিত নীতি অনুসরণ করি।’’
মমতা বলেন, "আমরা যেমন বাংলাদেশকে ভালোবাসি তেমনই বাংলাদেশের মানুষজনও আমাদের ভালোবাসেন। আমাদের ভাষা, সাহিত্য, পোশাক পরিচ্ছদ সবই এক। রাজনৈতিকভাবে যাই মতভেদ থাকুন না কেন, আমরা নিশ্চয়ই কেউই চায় না ধর্মে ধর্মে বিভেদ হোক।"
তিনি বলেন, "ধর্মের নামে হিংসা আমরা সমর্থন করি না। যেকোনও হিংসার ঘটনায় নিন্দনীয়। কিন্তু আমাদের কেন্দ্রের সরকারও তো একটা বিশেষ ধর্মের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড বিদ্বেষ নিয়ে চলছে। আমরা মনে করি, এটা ঠিক নয়।"
মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, "মন্দিরও থাকবে, মসজিদও থাকবে। ধর্ম যার যার, আমরা শান্তির পক্ষে, উন্নয়নের পক্ষে। মানুষ যেন তাঁর ধর্মীয় রীতি পালন করতে পারেন, এটা সরকারের দেখা দরকার।"
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের ইসকনের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেছেন বলেও জানিয়েছেন মমতা। তবে ইসকনের নেতাদের সঙ্গে কী ধরনের আলোচনা হয়েছে, সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
এদিকে, বাংলাদেশে হিন্দুসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত ‘হামলা’ নিয়ে আলোচনা করতে আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরের দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
বৈঠকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতার, সংখ্যালঘুদের কথিত ‘নিরাপত্তাহীনতা’ এবং চট্টগ্রাম জেলায় একটি মন্দির ভাঙচুরের বিষয়ে তারা আলোচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে এই বৈঠকের পর আগামীকাল শুক্রবার দেশটির সংসদের উভয় কক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর ভাষণ দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া একইদিন দেশটির সংসদে বাংলাদেশ ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, লোকসভায় (সংসদে) বেশ কয়েকজন সাংসদ বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেন। তারা জিজ্ঞেস করেন, বাংলাদেশে হিন্দু মন্দির ও প্রতীমা ভাঙচুরের ঘটনা বেড়েছে কি না। ভারত সরকার এই বিষয়টি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে উত্থাপন করেছে কি না।
এসব প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং সংসদকে বলেন, “বাংলাদেশে গত কয়েক মাসে হিন্দু মন্দির ও প্রতীমা ভাঙচুরের ঘটনার তথ্য শোনা গেছে। ভারতীয় সরকার এ ব্যাপারে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। যার মধ্যে তাঁতিবাজারে পূজামণ্ডপে হামলা, সাতক্ষীরার কালী মন্দির থেকে দুর্গাপূজার সময় সোনার মুকুট চুরির ঘটনা রয়েছে। ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারকে হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘুর প্রার্থনাস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া ভারত বাংলাদেশকে বলেছে সংখ্যালঘুসহ দেশটির সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের।”#
পার্সটুডে/এমএআর/২৮