বিজিবির নাম পুনরায় বিডিআর করা এবং ‘নির্দোষ’ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দাবি
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নাম পুনরায় বাংলাদেশ রাইফেলস্ (বিডিআর) করা, কারাগারে থাকা বাহিনীর ‘নির্দোষ’ সদস্যদের মুক্তিসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছেন কারানির্যাতিত বিডিআর পরিবারের সদস্যরা।
আজ (শুক্রবার) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘কারা নির্যাতিত বিডিআর পরিবার’ ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে যে আট দফা দাবি তুলে ধরা হয় সেগুলোর মধ্যে আছে- ‘নির্দোষ’ সব বিডিআর সদস্যকে নিঃশর্ত মুক্তি প্রদান; হাই কোর্টে করা রিট আবেদন অনুযায়ী বিডিআর সদস্যদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার দ্রুত পুনঃতদন্ত; তদন্ত প্রতিবেদন জাতির সামনে প্রকাশ; রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনে যেসব বিডিআর সদস্যদের মৃত্যু হয়েছে- তার সঠিক কারণ উদ্ঘাটন করে দোষীদের শাস্তি; ১৮ হাজার ৫২০ জন বিডিআর সদস্যকে চাকরিতে পুনর্বহাল; সব শহীদ সেনা, বিডিআর ও ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ (বেতন, ভাতা, পেনশন) ও পুনর্বাসন; বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) নামে বিজিবিকে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) প্রতিস্থাপন করা এবং প্রতি বছরের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা।
তৎকালীন বিডিআরের কারাবন্দি এক সদস্যের সন্তান আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আধা সামরিক বাহিনী হিসেবে বিডিআরের একটি আইন আছে। সেই আইনে বিচারে সাজা সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড। তাহলে তাদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করা হলো কেন? রিমান্ডের নামে প্রত্যেক বিডিআর সদস্যকে নির্যাতন করা হয়েছে।”
বিডিআর কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ফয়জুল আলম বলেন, “২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন সরকারের ইন্ধনে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৮ হাজার ৫২০ বিডিআর সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। অনেককে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কারাদণ্ডের সাজা শেষ হওয়ার পরও কারাগার থেকে তারা জামিনে বের হতে পারেননি।”
প্রত্যেক নাগরিকের জামিন পাওয়ার অধিকার আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যেসব বিডিআর সদস্য কারাবন্দি আছেন, তাদের পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। একদিকে তাদের জীবন, আরেকদিকে তাদের সন্তানের জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে।”
তৎকালীন সরকার ‘ক্ষমতা পাকাপোক্ত’ করার জন্য বিডিআর বিদ্রোহ ঘটিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ফয়জুল আলম।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ, সমন্বয়ক রাকিব, তুহিন অন্যদের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। সেই বিদ্রোহের পর সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি করা হয়।
বিদ্রোহের বিচার বিজিবির আদালতে হলেও হত্যাকাণ্ডের মামলা বিচারের জন্য আসে প্রচলিত আদালতে। এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি আটকে আছেন ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের।#
পার্সটুডে/এমএআর/১৩