৬ বন্দিকে ফেরত পেয়েও অপহৃত ৬০২ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেননি নেতানিয়াহু
(last modified Sun, 23 Feb 2025 05:48:55 GMT )
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১১:৪৮ Asia/Dhaka
  • ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তির সময় একটি সনদ দেয় হামাস
    ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তির সময় একটি সনদ দেয় হামাস

ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস গতকাল ইসরাইলের আরও ছয় বন্দিকে মুক্তি দিলেও অপহৃত ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনির মুক্তির বিষয়টি স্থগিত করেছে দখলদার সরকার। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া বন্দিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে তেল আবিবের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।

আজ (রোববার) ভোরে এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের বন্দিদের অসম্মান করা এবং অপপ্রচারের জন্য বন্দিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করাসহ হামাস বারবার যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করছে। এ কারণে পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া বন্দিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত গতকাল (শনিবার) যেসব সন্ত্রাসীদের (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাঁদের ছাড়া হবে না।’

এদিকে, ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ করেছেন হামাসের মুখপাত্র আবদুল লতিফ আল-কানুই। তিনি বলেছেন, শনিবার চুক্তি অনুযায়ী ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেয়া হয়নি। ইসরাইলকে চুক্তির অবশিষ্ট শর্তাবলী এবং মানবিক প্রটোকল বাস্তবায়নের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, "প্রথম পর্যায় শুরু হওয়ার পর থেকে ৩৩ দিন অতিবাহিত হয়েছে, দখলদার সরকার চুক্তির সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন সম্পন্ন করেনি।"

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এর আগে সতর্ক করে বলেছিল যে, যদি দখলদার সেনাবাহিনী যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে তবে তারা ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তি বিলম্বিত করতে পারে।

গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে হামাস ও ইসরাইল। মাঝখানে একবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জিম্মিদের মুক্তি আটকে দেয়ার কথা জানিয়েছিল হামাস।  

দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাঁদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। ওই অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বন্দিদের একটি মঞ্চে নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা। এ সময় সেখানে উপস্থিত গাজাবাসীর উদ্দেশে বন্দিদের হাত নাড়াতে এবং ভাষণ দিতে দেখা যায়।

গতকালের আগে বৃহস্পতিবার চার ইসরাইলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করে হামাস। তবে ওই দিন শিরি বিবাসের দেহাবশেষের জায়গায় ভুল করে অন্য কারও দেহাবশেষ হস্তান্তর করা হয়েছিল। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ইসরাইল। অবশ্য পরদিন শিরি বিবাসের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মরদেহটি শিরি বিবাসের বলে নিশ্চিত করেছে তাঁর পরিবার।

চলমান যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ ৪২ দিনের। এই সময়ে মোট ৩৩ ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস। বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগার থেকে ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। তারপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ শুরুর কথা রয়েছে। তবে বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতিতে যেতে আগ্রহী নন নেতানিয়াহু। বেশির ভাগ জীবিত বন্দি মুক্তি পাওয়ায় গাজায় আবারও যুদ্ধ শুরু করতে পারে যুদ্ধবাজ ইসরাইল।#

পার্সটুডে/এমএআর/২৩