গাজা শহর দখলের পরিকল্পনা ইসরায়েলের: হামাসের নিন্দা, প্রতিরোধের অঙ্গীকার
https://parstoday.ir/bn/news/event-i151026
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত গাজা শহর দখলে নেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইহুদিবাদী মন্ত্রিসভা।
(last modified 2025-08-09T09:30:47+00:00 )
আগস্ট ০৮, ২০২৫ ১২:৩৪ Asia/Dhaka
  • যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা শহর
    যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা শহর

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত গাজা শহর দখলে নেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইহুদিবাদী মন্ত্রিসভা।

আজ (শুক্রবার) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামাসকে পরাজিত করার এই পরিকল্পনার অধীনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা সিটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রস্তুতি নেবে। মন্ত্রিসভা যুদ্ধ শেষ করার জন্য পাঁচটি মূলনীতিও গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে হামাসকে নিরস্ত্র করা, জীবিত ও মৃত সব বন্দিকে ফিরিয়ে আনা, গাজা উপত্যকাকে নিরস্ত্রীকরণ করা, সেখানে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা এবং হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ছাড়া একটি নতুন বেসামরিক প্রশাসন গঠন করা।

এদিকে, ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গাজা দখলের পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) কর্তৃক ‘পরোয়ানাভুক্ত যুদ্ধাপরাধী’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

এক বিবৃতিতে প্রতিরোধ সংগঠনটি বলেছে,“যুদ্ধাপরাধী নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও বাস্তুচ্যুতির নীতি অব্যাহত রাখারই অংশ, যা গাজায় আমাদের জনগণের ওপর নতুন করে অপরাধ চাপিয়ে দেবে।”

হামাস এই পরিকল্পনাকে গাজা যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত চলমান আলোচনার সরাসরি উল্টোপথে হাঁটা বলে উল্লেখ করেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে,“নেতানিয়াহুর এই বক্তব্য আলোচনার প্রক্রিয়ার সুস্পষ্ট অস্বীকৃতি এবং গত যুদ্ধবিরতি পর্ব থেকে সরে আসার আসল উদ্দেশ্য প্রকাশ করে দিচ্ছে, যদিও আমরা একটি চূড়ান্ত চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম।”

হামাস জোর দিয়ে বলেছে, নেতানিয়াহুর মন্তব্য স্পষ্ট করে দেয় কেন সর্বশেষ যুদ্ধবিরতির আলোচনা সে নিজে ভেঙে দিয়েছিল।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে,“আক্রমণ বাড়ানোর পরিকল্পনা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, ব্যক্তিগত স্বার্থ ও উগ্র মতাদর্শিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য- সে নিজের বন্দিদেরও ত্যাগ করতে প্রস্তুত।”

সংগঠনটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, গাজার ওপর আক্রমণ বাড়ানো হলে ইসরায়েলি বাহিনীকে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

“গাজা দখলের বিরুদ্ধে এবং যেকোনো অভিভাবকত্ব চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে অটল থাকবে। আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে যেকোনো আক্রমণ বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া হবে গুরুতর—দখলদার ও তার দমনপীড়ন চালানো বাহিনীকে এর জন্য বড় এবং মূল্যবান খেসারত দিতে হবে।”

হামাস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মুসলিম বিশ্বকে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনার নিন্দা জানাতে এবং তা ঠেকাতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।

“আমরা আরব ও ইসলামি দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানাচ্ছি যেন তারা এই বিপজ্জনক বক্তব্যের নিন্দা জানায়, দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে আগ্রাসন বন্ধ করে, দখলদারিত্ব শেষ করে, আমাদের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার নিশ্চিত করে এবং গাজায় চলমান অপরাধের জন্য শত্রুর নেতাদের জবাবদিহিতার মুখোমুখি করে।”

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬১,০০০ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই যুদ্ধের মাধ্যমে তেলআবিব এমন লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করছে, যেমন—গাজার হামাস প্রতিরোধ আন্দোলনকে পরাজিত করা এবং গাজাবাসীর ব্যাপকভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোতে বাস্তুচ্যুতি ঘটানো।#

পার্সটুডে/এমএআর/৮