ইরানি 'এক্স' ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া:
"প্রতিবন্ধকতা নয়, ইরানের আত্মনির্ভরতার চালিকাশক্তি হবে স্ন্যাপব্যাক”
-
ইরানি \\\\\\\'এক্স\\\\\\\' ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া
পার্সটুডে: ইউরোপের তিন দেশ ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া (স্ন্যাপব্যাক) সক্রিয় করার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (টু্ইটার)-এ তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ইরানি এক্স ব্যবহারকারীরা জোর দিয়ে বলেছেন, অতীতের মতো এবারও এই নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের অগ্রগতি ও আত্মনির্ভরতার কারণ হিসেবে কাজ করবে।
ইরানের সাথে পরমাণু সমঝোতায় (জেসিপিওএ) স্বাক্ষরকারী তিনটি ইউরোপীয় দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল (স্ন্যাপব্যাক) করার জন্য নোটিশ পাঠিয়েছে। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন শুধু তাদের আইনি প্রতিশ্রুতি পূরণেই ব্যর্থ হয়নি, বরং আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা একচেটিয়াভাবে অনুসরণ করেছে। এমনকি ইনস্টেক্স (INSTEX) নামের যে আর্থিক ব্যবস্থা ইরানের অর্থনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটিকে অকার্যকর ও প্রতীকী যন্ত্রে পরিণত করা হয়েছে।
পার্সটুডে জানিয়েছে, ইরানি এক্স ব্যবহারকারীরা মনে করেন, এই পদক্ষেপ ইরানের জাতীয় ইচ্ছাশক্তিকে দুর্বল করতে পারবে না; বরং তা নতুন করে অগ্রগতির গতি সঞ্চার করবে।
এ প্রসঙ্গে, “দোখতারে ইরান” নামে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন: "ইউরোপ কেবল কাগজে-কলমে পরমাণু সমঝোতায় (জেসিপিওএ) ছিল। আমেরিকা চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর তারা অক্ষরে অক্ষরে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে এবং দুই বছর আগে, কোন শর্ত বা অন্য কোন আইনি ভিত্তি ছাড়াই অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেনি। ইউরোপের আইনি বাধ্যবাধকতা একটি ছাগলের নাকের পানির চেয়েও মূল্যহীন।"
আরেকজন ব্যবহারকারী জাওয়াদ জাঙ্গনেহ লিখেছেন:“বহু বছর ধরে শত্রুরা নিষেধাজ্ঞা, হুমকি ও চাপ দিয়ে ইরানিদের হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করতে চেয়েছে। কিন্তু তারা জানে না যে, এই জাতি প্রতিবার কঠিন পরিস্থিতি থেকে আরও সম্মানের সাথে বেরিয়ে এসেছে। এই বিজয়ের রহস্য একতা ও সংহতি ছাড়া আর কিছুই নয়। যখন আমরা ইরানের জনগণ একে অপরের পাশে দাঁড়াই, তখন কোন শক্তিই আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সাহস পায় না।"
জাহরা জারে মন্তব্য করেছেন: "পশ্চিমারা আমাদের সামনে দুটি পথ রাখে—নিষেধাজ্ঞা অথবা আত্মসমর্পণ। কিন্তু ইরান তৃতীয় পথ বেছে নিয়েছে—স্বাধীনতা ও অগ্রগতি।”
রিহানা নামের একজন এক্স ব্যবহারকারী লিখেছেন:“স্ন্যাপব্যাক মানে আগের নিষেধাজ্ঞায় ফিরে যাওয়া। কিন্তু আমরা কি এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই পারমাণবিক প্রযুক্তি, ন্যানো, জটিল ওষুধ এবং সুনির্দিষ্ট আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র অর্জন করিনি? ইরানের জন্য নিষেধাজ্ঞা মানে আত্মনির্ভরতার বাধ্যতামূলক বিশ্ববিদ্যালয়।”
মোতাহহারেহ ফারুখারি লিখেছেন:“শত্রুরা আমাদের পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করেছে, কিন্তু ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শিল্প টিকে আছে। এর মানে হল ইরানী জনগণের শক্তি হত্যা ও নিষেধাজ্ঞার ঊর্ধ্বে।"
মোহাম্মদ সাদেক শাহবাজি বিশ্বাস করেন: "ইরানিরা এই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে যে, কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের দিকে তাকানোর পরিবর্তে, তাদের অভ্যন্তরীণভাবে শক্তিশালী হতে হবে এবং নিষেধাজ্ঞা প্রশমিত ও দুর্বলতা দূর করার চেষ্টা করতে হবে।"
এক্স ব্যবহারকারী ফাতেমা রৌশানদেল মন্তব্য করেছেন: "পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞা ও হুমকি হল নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠা এবং শক্তি ও স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার একটি সুযোগ। একটি শক্তিশালী ইরান মানে নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং স্থানীয় বিজ্ঞান; যে-ই আমাদের বিপরীতে দাঁড়াবে বিরোধিতা করে, সে-ই হারবে।”
নাদের নামদার লিখেছেন:“পশ্চিমা দেশগুলোর নীতি আসলে নিষেধাজ্ঞার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তাই তারা বারবার ইরানের সঙ্গে বৈরিতা করে এবং নিজেদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে।”
অন্যদিকে মোস্তাফা স্ন্যাপব্যাক প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন সাম্প্রতিক ১২ দিনের ইসরায়েলি আগ্রাসনের কথা:“১২ দিনের যুদ্ধ দেখিয়েছে, ইরান আজকের দিনে অঞ্চলের প্রথম সামরিক শক্তি। আমাদের তরুণদের হাতেই এসব সামরিক সাফল্য এসেছে, আর তা এসেছে নিষেধাজ্ঞার মধ্য দিয়েই।”#
পার্সটুডে/এমএআর/৩১