'অবৈধ' স্ন্যাপব্যাক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করুন: জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনকে ইরান
https://parstoday.ir/bn/news/event-i153066-'অবৈধ'_স্ন্যাপব্যাক_নিষেধাজ্ঞা_প্রত্যাখ্যান_করুন_জোট_নিরপেক্ষ_আন্দোলনকে_ইরান
পার্স-টুডে: ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করাকে "ভিত্তিহীন এবং অবৈধ" বলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি।
(last modified 2025-11-16T11:42:52+00:00 )
অক্টোবর ১৬, ২০২৫ ১২:৩৮ Asia/Dhaka
  • উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় জোট-নিরপেক্ষ সম্মেলন তথা ন্যামের সম্মেলন
    উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় জোট-নিরপেক্ষ সম্মেলন তথা ন্যামের সম্মেলন

পার্স-টুডে: ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করাকে "ভিত্তিহীন এবং অবৈধ" বলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি।

ইরানের মন্ত্রী জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (NAM) সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং E3 নামে পরিচিত তিনটি ইউরোপীয় দেশ  তথা ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানি'র মাধ্যমে উত্থাপিত এ ধরনের  "অবৈধ" কৌশল বা ধূর্তামিপূর্ণ তৎপরতা প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সমন্বয় ব্যুরোর মন্ত্রী পর্যায়ের ১৯তম মধ্যবর্তী বৈঠকে আরাকচি এই আহ্বান জানান।

পশ্চিমা এই সরকারগুলো ইরানের বিরুদ্ধে বাতিল হয়ে যাওয়া জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহালের লক্ষ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অপব্যবহার করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। 

আরাকচি আরও বলেন, এই পদক্ষেপটি রেজোলিউশন ২২৩১-এ বর্ণিত বিধানগুলোর "স্পষ্ট লঙ্ঘন", যা তেহরান ও ছয় বিশ্বশক্তির মধ্যে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিকে সমর্থন দিয়েছিল। ওই সমঝোতা বা চুক্তি জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (JCPOA) নামে পরিচিত।

ইরানের শীর্ষ কূটনীতিক আরও বলেন, যদিও প্রস্তাবটির মেয়াদ ১৮ অক্টোবর শেষ হওয়ার কথা কিন্তু "এই স্থগিত পদক্ষেপগুলোর পুনরুজ্জীবণ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অবৈধ, যা রাজনৈতিক চাঁদাবাজির হাতিয়ার ছাড়া আর কিছুই নয়। এই পরিস্থিতিতে, আমরা ন্যাম সদস্যদের আন্দোলনের মূলনীতির প্রতি অটল থাকার এবং আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘন করে রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত এই ধরনের অবৈধ ও নীতি-বিরুদ্ধ কৌশলের কাছে মাথা নত না করার আহ্বান জানাচ্ছি।"

আরাকচি বলেন, এই ধরনের অবস্থান গ্রহণ "শুধুমাত্র ন্যামের মূল মূল্যবোধের প্রতি আমাদের যৌথ অঙ্গীকারকে নবায়ন করে না একইসঙ্গে বিশ্বের কাছে স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে স্বাধীন দেশগুলো, সংহতি এবং একই উদ্দেশ্য অর্জনের সংকল্পে অবিচলভাবে ঐক্যবদ্ধ, তারা গুন্ডামি বা জবরদস্তিমূলক চাপের কাছে মাথা নত করবে না।"

ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানি ২৮শে আগস্ট তথাকথিত স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া চালু করে, যার ফলে ইরানের উপর জাতিসংঘের সমস্ত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের জন্য ৩০ দিনের একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়। কূটনীতির পথ রক্ষার জন্য রাশিয়া এও চীনের শেষ মুহূর্তের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, ২৬শে সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা পরিষদ একটি ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়।

দুই দিন পর, E3 এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের ঘোষণা দেয় এবং জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলিকে তা কার্যকর করার আহ্বান জানায়। তেহরান স্পষ্টভাবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় মিত্ররা তাদের প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হয়ে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিকে অগ্রাহ্য করেছিল।

ইরানি কর্মকর্তারা বলছেন যে জাতিসংঘের কোনও সদস্য রাষ্ট্র একতরফা এবং বেআইনি পদক্ষেপ মেনে চলতে বাধ্য নয়। ইরানের অবস্থান জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ২২৩১-এ প্রতিষ্ঠিত, যা JCPOA অনুমোদন করেছে এবং তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচির উপর থেকে পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞাগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে নিয়েছে। ইরানি কর্মকর্তারা বলছেন যে এই প্রস্তাবটি একটি স্পষ্ট, সময়-সীমাবদ্ধ কাঠামো প্রতিষ্ঠা করেছে যার অধীনে সমস্ত পারমাণবিক-সম্পর্কিত বিধিনিষেধ স্থায়ীভাবে ১৮ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে শেষ হবে।

তার বক্তব্যে অন্যত্র, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করেছেন, বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার অভিযানের পর তাদের অবস্থার ওপর আলোকপাত করেছেন।

গাজায় বর্তমানে একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকায়, তিনি বলেন, তেহরান "গণহত্যা বন্ধ, দখলদার সৈন্যদের অপসারণ, গাজাবাসীদের মানবিক সহায়তা প্রদান এবং গাজা পুনর্গঠনের যেকোনো পদক্ষেপকে সমর্থন করে। ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে স্বীকৃতি না দিলে ফিলিস্তিনের সমস্যার যেকোনো সমাধান ব্যর্থ হবে। ইসরায়েলি অপরাধীদের জবাবদিহি করতে হবে, বিচার করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে।"

আরাকচি আরও বলেন, আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য এবং ইসরায়েলি দখলদারিত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ফিলিস্তিনের "তাদের ন্যায়সঙ্গত ও বৈধ সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।"

জুন মাসে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বিনা উস্কানিতে আগ্রাসনের দিকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, এই আক্রমণ "প্রমাণ করে যে তারা তথা ইসরায়েল কোন নীতিগত বা আইনি সীমানা মানে না। যুদ্ধাপরাধী ও গণহত্যার অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য, ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য এবং কেউ যাতে জবাবদিহিতা থেকে রেহাই না পায় তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের হাতে থাকা প্রতিটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আইনি ব্যবস্থাকে কাজে লাগানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"

পার্স টুডে/এমএএইচ/১৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।