অসম রাইফেলসের ২ জওয়ানও গুলিবিদ্ধ
মণিপুরে তল্লাশি অভিযানের সময় গুলিবর্ষণ, নিহত ১ বিএসএফ জওয়ান
ভারতে বিজেপিশাসিত মণিপুরে চলমান সহিংসতায় রঞ্জিত যাদব নামে এক বিএসএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল (সোমবার) গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হলে আজ (মঙ্গলবার)তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
জানা গেছে, ৫ জুন দিবাগত মধ্য রাতে তল্লাশি অভিযানের সময় নিরাপত্তা বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে বাপকভাবে পাল্টাপাল্টি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তা বাহিনী এ সময়ে কার্যকরভাবে পাল্টা জবাব দিয়েছে। ওই ঘটনায় এক বিএসএফ জওয়ান গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতরভাবে আহত হয়। এ সময়ে অসম রাইফেলসের দুই জওয়ানও গুলিবিদ্ধ হলে তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি গোলযোগপূর্ণ রাজ্যটি সফর করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি এ সময়ে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি বলেন, যাদের কাছে অস্ত্র রয়েছে তাদের পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। শাহ বলেছিলেন, ২ জুন থেকে তল্লাশি অভিযান শুরু হবে। কারো কাছে অস্ত্র পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর অস্ত্র সমর্পণ শুরু করে দুর্বৃত্তরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সফরের পর রাজ্যে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। এ পর্যন্ত ৭৯০টি অস্ত্র ও ১০,৬৪৮ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার হয়েছে। গত ৩ মে থেকে রাজ্যটিতে জাতিগত দাঙ্গার সময় পুলিশের কাছ থেকে এ সব অস্ত্র লুট করা হয়েছিল।

এদিকে, সহিংসতা-বিধ্বস্ত মণিপুরে রাজ্য সরকার আগামী ১০ জুন পর্যন্ত ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে নয়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। গত ৩ মে থেকে রাজ্যে ইন্টারনেট পরিসেবায় বিধিনিষেধ রয়েছে। অন্যদিকে, ইন্টারনেট পরিসেবা স্থগিত করার বিরুদ্ধে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। অ্যাডভোকেট চোংথাম ভিক্টর সিং এবং ব্যবসায়ী মায়েংবাম জেমস তাদের আবেদনে বলেছেন, রাজ্যব্যাপী ইন্টারনেট বন্ধের কারণে তাদের জীবন ও জীবিকা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। এতে মানুষের দৈনন্দিন জীবন ও মৌলিক অধিকারের ক্ষতি হচ্ছে।
মণিপুরে গত ৩ মে থেকে মেইতেই এবং কুকি উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। তার জেরে এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ নিহত হয়েছেন। অমিত শাহের সফরের আগেই জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষে প্রাণ হারান ৪০ জন জঙ্গি। নতুন করে সেই সহিংসতা ছড়িয়েছে ককচিং জেলার সুগনুতে। সেখানে কুকি জনগোষ্ঠীর জঙ্গিরা স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়কের বাড়িসহ শতাধিক বাড়িতে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ।
শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণ ও অন্যান্য সুবিধার জন্য ‘মেইতেই’ সম্প্রদায়কে ‘তপশিলি উপজাতি’ মর্যাদা দেওয়ার প্রচেষ্টা হলে গত ৩ মে থেকে ‘কুকি’ ও ‘মেইতেই’ সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ান মোতায়েনের পাশপাশি স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিধিনিষেধ কার্যকর থাকলেও সেখানকার পরিস্থিতি অশান্তই রয়েছে। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।