‘এক দেশ, এক ভোট’ প্রস্তাবের বিরোধিতায় সোচ্চার হলেন মমতা, কেন্দ্রীয় কর্মকর্তাকে চিঠি
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ‘এক দেশ, এক ভোট’ প্রস্তাবের বিরোধিতায় সোচ্চার হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি আজ (বৃহস্পতিবার) ওই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছেন। মমতা বলেছেন, আমি দুঃখিত যে এক জাতি এক ভোট ধারণার সঙ্গে একমত হতে পারছি না। আমরা এই প্রস্তাবকে সমর্থন করছি না। প্রথমেই ‘এক জাতি’ ধারণাটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার কথায় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এদেশে কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়াও একাধিক প্রাদেশিক অর্থাৎ, রাজ্য সরকার রয়েছে। সেক্ষেত্রে ‘এক দেশ’ বা ‘এক জাতি’ এই ধারণার অর্থ কী?
মমতা বলেছেন, আমি স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে। তাই আমি আপনাদের এই পরিকল্পনারও বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নির্দিষ্ট মেয়াদের আগেই লোকসভা ভেঙে দেওয়া হলে এবং নতুন করে সাধারণ নির্বাচন হলে, বিধানসভার ক্ষেত্রে কী হবে, সেগুলোও কী ভেঙে দেওয়া হবে? প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এক দেশ এক ভোট নীতি কীভাবে বাস্তবায়িত করা যাবে তা নিয়ে ইতোমধ্যেই সাবেক রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। উচ্চপর্যায়ের ওই কমিটির সচিব নীতেন চন্দ্রকে চিঠি লিখেছেনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভারতবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রয়েছে। বিভিন্ন জাতি, বিভিন্ন ভাষা, বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। একেকটা রাজ্যে একেকটা আঞ্চলিক সমস্যা আছে। একেকটা সময়ে একেটা রাজ্যে নির্বাচন হয়। কেউ স্থিতিশীল সরকার পায়, কেউ পায় না। কোথাও সংখ্যাগরিষ্ঠ হয় কোথাও সংখ্যালঘু হয়। অনেক সময় সরকার তৈরি হলেও কিনে নেওয়া হচ্ছে। এই সমস্যাগুলো আছে। সমস্যা হল- যদি কোনও রাজ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায় সে ক্ষেত্রে কী হবে? তাহলে কী আমরা রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারের দিকে চলে যাচ্ছি? এক দেশ এক নির্বাচন মানে হচ্ছে শেষপর্যন্ত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের রূপ। যেটা আমেরিকায় আছে। আমাদের ভারতে কিন্তু সেভাবে সংবিধানে বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত নয়। ভারতবর্ষ গণতান্ত্রিক দেশ। প্রজাতান্ত্রিক দেশ। সংখ্যাগরিষ্ঠ অবস্থানে থাকলেই যা খুশি করা যায় না বলেও কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। #