ফিলিস্তিনকে বিভক্ত করার প্রকল্পে টনি ব্লেয়ারের ভূমিকা কী?
-
সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার
পার্সটুডে-ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোটের কথা উল্লেখ করে একজন ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক এবং লেখক গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন: গাজায় প্রতিদিন যা ঘটছে তা গণহত্যা এবং জাতিগত নির্মূল অভিযান চালানোর অপরাধ।
ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক ও লেখক "ফারহান আলকাম" বলেছেন: গাজায় যা ঘটছে তা গণহত্যা এবং জাতিগত নির্মূলের অপরাধ যা দখলদাররা প্রতিদিন বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে করে যাচ্ছে। শাহাব নিউজ এজেন্সির উদ্ধৃতি দিয়ে পার্সটুডে আরও জানায়, আলকাম বলেছেন: গাজার সমস্ত মানবতা দিনরাত হত্যার আশঙ্কায় আতঙ্কিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখন যুদ্ধ বন্ধ করতে চান না উল্লেখ করে তিনি জোর দিয়ে বলেন: ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের ভূমি এবং ভূখণ্ডের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বাস্তুচ্যুতির যে কোনও পরিকল্পনার বিরোধিতা করে।
গাজা যুদ্ধ শেষ করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে এই বিশ্লেষক বলেছেন: ট্রাম্পের পরিকল্পনা আসলে যুদ্ধ শেষ করার লক্ষ্যে নয় বরং তার এবং নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত স্বার্থ ও এ অঞ্চলে ইসরাইল-আমেরিকার দখলদারিত্বকে একীভূত করার লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে।
আলকাম আরও বলেন: মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন না। এর প্রমাণ হল প্রতিরোধ বাহিনী তার দূত স্টিভ হুইটকফের সঙ্গে যে চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল ওই চুক্তি থেকে তাকে প্রত্যাহার করা।
ফিলিস্তিনি এই লেখক আরও বলেন: ট্রাম্প তার মিত্রদের প্রতিও কোনও দয়া দেখান না। তাদের বিরুদ্ধেও ট্রাম্প অভ্যুত্থান ঘটান। কাতার এই দাবির পক্ষে একটি উদাহরণ। কাতার আমেরিকার ঘনিষ্ট মিত্র, এই দেশটি মধ্যস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে এবং এই অঞ্চলের বৃহত্তম মার্কিন ঘাঁটি কাতারে স্থাপন করা সত্ত্বেও, দেশটির বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে, আল-উদেইদ ঘাঁটিতে সতর্কতা সিস্টেম এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিষ্ক্রিয় করে করে ফিলিস্তিনি আলোচনাকারী প্রতিনিধিদলকে আক্রমণ করার জন্য নেতানিয়াহুকে সবুজ সংকেত দিয়েছে।
তিনি ব্যাখ্যা করেন: চুক্তির কাছাকাছি আসার বিষয়ে ট্রাম্পের দাবি অতিরঞ্জিত বাগাড়ম্বর ও আশাবাদ ছাড়া আর কিছুই নয়। ট্রাম্পের লক্ষ্য হল নেতানিয়াহুকে তার আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়া এবং অভ্যন্তরীণ সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া এবং একটি কাল্পনিক বিজয় অর্জনের মিথ্যাচার ছড়ানো।
আরব দেশগুলোর নেতাদের সাথে ট্রাম্পের বৈঠকের কথা উল্লেখ করে এই বিশ্লেষক বলেন যে, গাজাকে পশ্চিম তীর থেকে আলাদা করে টনি ব্লেয়ারের (প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী) তত্ত্বাবধানে একটি বিকল্প সরকারের কাছে হস্তান্তরের মাধ্যমে বিকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন করে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ফ্রাঙ্কো-সৌদি পরিকল্পনাকে নস্যাত করাই এর লক্ষ্য। তিনি আরও বলেন: পশ্চিম এশীয় অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্যই কেবল ব্লেয়ারকে ডাকা হয়েছে।
তিনি ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার অসারতাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুখে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনাই মনে করেন। এই প্রস্তাব যে কেবল ফিলিস্তিনি জনগণের স্বার্থেই যাবে না তাই নয় বরং দখলদারিত্বকে স্থিতিশীল করে তুলবে বলেও মনে করেন।
তিনি এই বলে শেষ করেন: ফিলিস্তিনি জনগণের স্থিতিশীলতার আশা এবং তাদের প্রতিরোধ এমন এক পাথরের মতো যা শত্রুদের সমস্ত ষড়যন্ত্রকে ধ্বংস করে দেয়। ৭ অক্টোবর (আল-আকসা তুফান) ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিশ্ব জনমতের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন এনে দিয়েছে এবং কয়েক দশক ধরে আলোচনার পর সামান্য সাফল্যের সাথে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির একটি বিস্তৃত তরঙ্গের দ্বার উন্মুক্ত করেছে।#
পার্সটুডে/এনএম/২৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।