ভারত ও মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে কাম্পালায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক
https://parstoday.ir/bn/news/india-i133516-ভারত_ও_মালদ্বীপের_পররাষ্ট্রমন্ত্রীর_মধ্যে_কাম্পালায়_গুরুত্বপূর্ণ_বৈঠক
ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুসা জামিরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
(last modified 2025-11-28T10:09:50+00:00 )
জানুয়ারি ১৯, ২০২৪ ১৭:২৮ Asia/Dhaka
  • ভারত ও মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে কাম্পালায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক

ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুসা জামিরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

এ সময়ে উভয় নেতার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এবং ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম) সম্মেলনে যোগ দিতে উগান্ডায় গেছেন। শুক্রবার শুরু হওয়া শীর্ষ সম্মেলনের আগে দুই নেতার বৈঠক হয়। এ সময় তিনি মালদ্বীপে চলমান উন্নয়ন প্রকল্প,  ‘সার্ক’ ও ‘ন্যাম’-এ উভয় দেশের অংশগ্রহণ নিয়েও আলোচনা করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় বলেন,  ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আলোচনা হয়েছে ‘ন্যাম’ সম্পর্কিত বিষয় নিয়েও।’     ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের পর মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ভারতীয় সামরিক কর্মীদের প্রত্যাহারের পাশাপাশি মালদ্বীপে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়ে এবং ‘সার্ক’ ও ‘ন্যাম’ নিয়ে চলমান উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার বিষয়ে মত বিনিময় করেছি। তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের সহযোগিতা আরও জোরদার ও প্রসারিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুইজ্জুর সচিবালয় সম্প্রতি ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেনাদের মালদ্বীপ ছাড়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার প্রেক্ষাপটে জয়শঙ্করের পার্শ্ববৈঠক  খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভারতের পক্ষ থেকে মালদ্বীপবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টাও করা হচ্ছে। জানা গেছে, ভারতে আসন্ন প্রজাতন্ত্র দিবসে সামরিক কুচকাওয়াজে আমন্ত্রিত দেশ হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মালদ্বীপের যুবা ক্যাডেটরা। এর পাশাপাশি সে দেশের একঝাঁক যুবা আমলা হায়দরাবাদে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব রুরাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পঞ্চায়েত রাজ’-এ কয়েকসপ্তাহ প্রশিক্ষণ নেবেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মালদ্বীপের প্রেসিদেন্ট মুহাম্মদ মুইজ্জুর সচিবালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম সে দেশের গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ভারতীয় সেনারা মালদ্বীপে থাকতে পারবেন না। এটাই প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু এবং তার সরকারের সিদ্ধান্ত। এরপরেই ওই ইস্যুতে কূটনৈতিক মহলে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ওই বিষয়ে বিরোধীরা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছে। এছাড়া ভারত ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে মালদ্বীপের নেতাদের বিতর্কিত মন্তব্যের পর দু’দেশের সম্পর্ক বেশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রীর মোদীর সাম্প্রতিক লাক্ষাদ্বীপ সফরের পরেই ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী এবং বেশ কিছু রাজনীতিক। বিতর্ক এবং ঘরে-বাইরে চাপের মধ্যে তিন মন্ত্রীকেই সাসপেন্ড করেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু।

এসবের আগে জানুয়ারির শুরুতে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু বলেছিলেন, এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মালদ্বীপের জনগণ স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে তারা দেশে বিদেশী সেনাদের উপস্থিতি চায় না। বর্তমানে ভারতই একমাত্র দেশ যার সৈন্যরা এখানে উপস্থিত রয়েছে। মালদ্বীপের নাগরিকদের ইচ্ছার কথা মাথায় রেখে আমি ভারতকে সেনা প্রত্যাহার করতে বলেছি।

তিনি আরও বলেন, আমার পূর্ণ আস্থা আছে যে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারত মালদ্বীপের জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান করবে। আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এতটাই শক্তিশালী যে উভয় দেশই আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। এছাড়াও, তারা সামরিক উপস্থিতি ছাড়াই তাদের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে পারে।  

উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে  মুহাম্মদ মুইজ্জু ইন্ডিয়া আউটের শ্লোগান দিয়েছিলেন। ভারতীয় সেনাদের উপস্থিতি মালদ্বীপের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ এই বিশ্বাসের ভিত্তিতে প্রচারাভিযান চালানো হয়েছিল। নভেম্বরে নির্বাচনে জিতে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হন মুইজ্জু। এর পরপরই তিনি ভারতীয় সেনাদের ফেরত পাঠানোর কথা বলেন। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমআরএইচ/১৯  

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।