ভারতের উত্তর প্রদেশে কথিত ‘লাভ জিহাদ’ বিরোধী অধ্যাদেশ কার্যকর করলেন রাজ্যপাল
ভারতে বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশে 'বেআইনি ধর্ম পরিবর্তন অধ্যাদেশ' জারি হয়েছে। একেই কথিত ‘লাভ জিহাদ’ বিরোধী অধ্যাদেশ বলা হচ্ছে। আজ (শনিবার) রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করেছেন। দেশে এই প্রথম কোনও রাজ্যে এ ধরণের অধ্যাদেশ কার্যকর হল।
সরকারি সূত্রে খবর, জোর করে বা ‘অসৎ’ উদ্দেশে ধর্মান্তরিত করা থেকে রুখতে, ওই অধ্যাদেশ আনা হয়েছে। আজ (শনিবার) থেকেই এ সংক্রান্ত বিধি কার্যকর হয়েছে।
আগেই ‘লাভ জিহাদ’ রুখতে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বিল আনার কথা জানিয়েছিলেন বিজেপির ফায়ারব্রান্ড নেতা ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। গত (মঙ্গলবার) রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্ধার্থ নাথ সিং জানান, ধর্মান্তরিত করা রুখতে নয়া অর্ডিন্যান্স জারি করবে সরকার।
অর্ডিন্যান্সে বলা হয়েছে, জোর করে বিয়ের নামে ধর্ম পরিবর্তন করলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। নাবালিকা এবং তফসিলি জাতি-উপজাতি নারীকে ধর্মান্তর করলে ৩/১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার টাকার জরিমানা করা হবে। গণ ধর্মান্তরের ক্ষেত্রে একই মেয়াদের কারাবাস এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার সাজা হবে।
লাভ জিহাদ বিরোধী আইন অনুযায়ী, কোনও ধর্ম পরিবর্তন মানবে না সরকার। বিয়ের পরে কেউ ধর্ম পরিবর্তন করতে চাইলে জেলা প্রশাসকের দফতরে আবেদন করতে হবে।
গত ২৪ নভেম্বর (মঙ্গলবার) উত্তরপ্রদেশ মন্ত্রিসভা লাভ জিহাদ সম্পর্কিত অর্ডিন্যান্সকে অনুমোদন দেয়। এরপরে, এটি অনুমোদনের জন্য রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়েছিল। ওই অর্ডিন্যান্সটি আজ রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল অনুমোদন করেছেন। এবার ৬ মাসের মধ্যে এই অধ্যাদেশটি রাজ্য সরকারকে বিধানসভা থেকে পাস করতে হবে।
ভারতে সাধারণত উগ্রহিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠন কথিত ‘লাভ জিহাদ’ শব্দ ব্যবহার করে প্রচারণা চালায়। তাদের দাবি, মুসলিম ছেলেরা হিন্দু মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে কৌশলে ধর্মান্তর করায়। যদিও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই সংসদে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থাই ‘লাভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করেনি। আইনেও ‘লাভ জিহাদ’ -এর অস্তিত্ব নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও থেমে নেই হিন্দুত্ববাদী দলবল।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/বাবুল আখতার/২৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।