বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে বাঙালির অস্তিত্ব থাকত না: স্বপন ভট্টাচার্য
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে আজকে বাঙালির অস্তিত্ব থাকত না।’ আজ (রোববার) ভারতের পেট্রাপোলে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময়ে তিনি ওই মন্তব্য করেন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে আজকে বাঙালির অস্তিত্ব থাকত না।’ আজ (রোববার) ভারতের পেট্রাপোলে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময়ে তিনি ওই মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এ সময়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে বলেন, ‘এ পাশে আপনাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানাই যে তিনি একটি বক্তব্যে ‘জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছেন। আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিই, বাঙালি জাতির মুক্তি যুদ্ধের মূল স্লোগান ছিল ‘জয়বাংলা’। পাকিস্তানের উর্দু ভাষার বিরুদ্ধে, সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এই ‘জয়বাংলা’ স্লোগানই সমস্ত বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। আজও আমরা সেই জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে আমাদের সমস্ত কর্মকাণ্ড করি এবং ওই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আমরা লড়াইটা করে যাচ্ছি।’

মন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি তার অস্তিত্বের পূর্ণতা পেয়েছিল। আমরা স্বীকার করি এপার বাংলা বিশেষ করে ভারতের তৎকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীসহ সকল রাজনৈতিক শক্তি এবং সামাজিক শক্তি যারা মুক্তিযুদ্ধে অসহায় বাঙালির পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। সে কারণেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সফল হতে সহজ হয়েছিল। আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞতা স্বীকার করি ভারতবাসীর প্রতি, আপামর জনগণের প্রতি, সরকারের প্রতি। সামরিক বাহিনী যারা তাজা রক্ত দিয়ে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল সেই সব সৈনিকদের প্রতি। আজকে বাঙালি জাতির একটি আবেগের দিন কারণ বাহান্নর ভাষা আন্দোলনে যদি আমরা বিজয় লাভ না করতে পারতাম তাহলে বাঙালির অস্তিত্ব থাকত না। আজকে শুধু বাংলাদেশের বাঙালি নয়, এপার বাংলা, ওপার বাংলার সকলস্তরের মানুষের আজকে একটি মহামিলন, বিজয় এবং একটি আবেগ কাজ করছে।’
এদিন বাংলাদেশের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন তাঁর বক্তব্যে ভাষা আন্দোলনের শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোসহ দুই বাংলার সুসম্পর্ক এবং আমরণ ঐক্যবদ্ধ থাকার উপরে জোর দেন।
পেট্রাপোলের ওই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বনগাঁ পৌরসভার মুখ্য প্রশাসক শঙ্কর আঢ্য তাঁর স্বাগত বক্তব্যে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বাংলাদেশ থেকে আসা মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের স্বাগত জানিয়ে দুই বাংলার মিলনের উপরে জোর দেন।

বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক ও জেলা পরিষদের মেন্টর গোপাল শেঠ তাঁর বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করে বলেন তাঁরা আমাদের মায়ের মত, আম্মার মত। তিনি প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধী ও শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশেষভাবে স্মরণ করার পাশাপাশি ‘এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান’কে উদ্ধৃত করে পারস্পারিক শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দেন।
অনুষ্ঠানে উত্তর ২৪ পরগণা জেলা পরিষদের কর্মাধক্ষ্য একেএম ফারহাদ, বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধক্ষ্য সৌমেন দত্ত, ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ অন্যরা বাংলাদেশের অতিথিদের স্বাগত জানান এবং তাঁরাও ভারতীয় প্রতিনিধিদের পুষ্পস্তবক, উত্তরীয়, মেমেন্টো ইত্যাদি প্রদান করে স্বাগত জানান।

এবারের ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান করোনা পরিস্থিতির কারণে কিছুটা ছোটো আকারের হলেও মানুষজনের উৎসাহ ও উদ্দীপনার কোনও ঘাটতি ছিল না। ঐতিহবাহী যশোর রোডের দু’পাশের শিশু গাছগুলোতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে। যশোর রোডের উপরে যে তোরণ তৈরি করা হয়েছিল তাতেও দু’দেশের নেত্রীকে ‘বাংলার মা’ বলে উল্লেখ করা হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় ছিল দুই বাংলা মৈত্রী সমিতি, বনগাঁ পৌরসভা, ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত ও পেট্রাপোল চেকপোস্ট ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার সোসাইটি।
পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/২১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।