ভারতে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চসংখ্যক মৃত্যু রেকর্ড
ভারতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা কমলেও একদিনে ৪ হাজার ২০৫ জনের মৃত্যু রেকর্ড হয়েছে। একদিনে এটিই এ পর্যন্ত সর্বোচ্চসংখ্যক মৃত্যু।
গত ৮ মে করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ৪ হাজার ১৮৭ জনের। তারপর কয়েকদিন মৃত্যু কিছুটা কমে। কিন্তু আজ (বুধবার) সকাল ৮ টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ২০৫ জনের মৃত্যুর ফলে আগেকার সব রেকর্ড ভেঙে গেছে।
অন্যদিকে, দৈনিক সংক্রমণ পর পর দু’দিন সাড়ে ৩ লাখের নীচে রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে প্রকাশ, ২৪ ঘণ্টায় ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪২১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৮ জনে পৌঁছেছে। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৯৩ লাখ ৮২ হাজার ৬৪২ জন। বর্তমানে ৩৭ লাখ ৪ হাজার ৯৯ জন সক্রিয় করোনা রোগী হাসপাতাল অথবা হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে প্রকাশ, দেশে এপর্যন্ত ৩০ কোটি ৭৫ লাখ ৮৩ হাজার ৯৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। এ পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হয়েছে ১৭ কোটি ৫২ লাখ ৩৫ হাজার ৯৯১ জনকে। শতাংশের নিরিখে ভারত বর্তমানে মৃত্যু হার ১.০৯ শতাংশ। সুস্থতার হার ৮৩.০৪ শতাংশ। সক্রিয় রোগীর হার ১৫.৮৭ শতাংশ।
এদিকে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের মাত্রা বেড়া যাওয়া, একইসঙ্গে অক্সিজেনের ঘাটতি, হাসপাতালে বেডের সমস্যা, পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ ও জটিল করে তুলেছে। এই অবস্থায় দেশ-বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় নরেন্দ্র মোদি সরকার সকলকে ‘সদর্থক’ থাকার বার্তা দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আজ (বুধবার) প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এমপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘সদর্থক ভাবনার এই সান্ত্বনা স্বাস্থ্যকর্মী ও সেইসব পরিবারের কাছে ঠাট্টার মতো শোনায় যাঁরা নিজেদের আপনজনদের হারিয়েছেন এবং অক্সিজেন, হাসপাতাল ও ওষুধের ঘাটতিতে ভুগেছেন। বালির মধ্যে মুখ গুঁজে রাখাটা সদর্থকতা নয়। এটা দেশবাসীর সঙ্গে প্রবঞ্চনা।’
অন্যদিকে, আজ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, সরকার ধুমধাম করে ‘টিকা উৎসব’ করলেও ছিল না ভ্যাকসিন জোগানের আয়োজন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘ভারত বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকা উৎপাদক রাষ্ট্র। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ১২ এপ্রিল টিকা উৎসব পালন করেছে। কিন্তু টিকা সরবরাহের আয়োজন করেনি। সেজন্য ৩০ দিনের মধ্যে দেশের টিকাদানের হার ৮২ শতাংশ কমেছে।’
টিকাকরণের নিরিখে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, তুরস্ক ও ফ্রান্সের পিছনে রয়েছে বলে একটা গ্রাফ তুলে ধরে দাবি করেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেন, ‘মোদীজি টিকা তৈরির কারখানা ঘুরেছেন, ছবি তুলেছেন কিন্তু প্রথম টিকার বরাত কেন চলতি বছর জানুয়ারিতে দিয়েছে সরকার?’
‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশ ভারতীয় ভ্যাকসিন সংস্থাগুলোকে অনেক আগে অর্ডার দিয়েছিল। এর দায়িত্ব কে নেবে? বাড়ি বাড়ি টিকাকরণ ছাড়া করোনার সাথে লড়াই করা অসম্ভব’ বলেও কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী মন্তব্য করেন।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/আবুসাঈদ/১২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।