বিপ্লব বার্ষিকীতে ইরানের প্রেসিডেন্টের ভাষণ
ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপের’ ব্যর্থতা স্বীকার করেছে আমেরিকা: রায়িসি
-
ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি বলেছেন, ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ইসলামি শাসনব্যবস্থার দৌলতে ইরান আজ নানা অঙ্গনে এতটা অগ্রগতি অর্জন করেছে যে, শত্রুরা তা সহ্য করতে পারছে না।
এ কারণে তারা ইরানের বিরুদ্ধে তারা মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু করেছে। ইরানের জনগণকে দিয়েই এদেশের শাসনব্যবস্থার পতন ঘটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু তারা ইরানের জনগণের গতিপ্রকৃতি উপলব্ধি করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
আজ (শনিবার) ইসলামি বিপ্লবের বিজয় বার্ষিকীতে অংশগ্রহণকারী লাখ লাখ মানুষের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। তেহরানের আজাদি স্কয়ারে সমবেত জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট রায়িসি।
তিনি মার্কিন সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, তোমরা পৃথিবীর যেখানে হাত দিয়েছো সেখানেই প্রচণ্ড ধ্বংসলীলা চালিয়েছো। তোমরা ইরাক ও আফগানিস্তানসহ বিশ্বের বহু দেশ ধ্বংস করেছো। এখন তোমরা ইরানের জনগণের বন্ধু সাজতে এসেছো। তোমাদের মতো শয়তানি শক্তি পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই।তিনি বিপ্লব বার্ষিকীর শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী লাখোকোটি জনতার প্রতি ইঙ্গিত করে আমেরিকাকে উদ্দেশ করে বলেন, কিছুদিন আগে তোমরা যাদেরকে সহিংসতায় লেলিয়ে দিয়েছিলে তারা ইরানের প্রতিনিধিত্ব করত না। আজ বিপ্লবের প্রতি সংহতি জানিয়ে যে জনতার ঢল নেমেছে তারাই হচ্ছে এদেশের প্রকৃত প্রতিনিধি।
তারা নিজেরা ঘোষণা করেছে, ইরানের ওপর তারা ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগ করেছে। আবার যখন তারা উপলব্ধি করেছে যে, ইরানিরা এসব নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি কাটিয়ে উঠে নিজেদের উন্নতি ও অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে তখন তারা নিজেরাই স্বীকার করেছে যে, তাদের ইরানবিরোধী সর্বোচ্চ চাপ ব্যর্থ হয়েছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বলেন, তৎকালীন স্বৈরাচারী শাহ সরকার এদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধযজ্ঞ চালিয়েছে এবং জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। শাহ সরকারের একমাত্র লক্ষ্য ছিল আমেরিকাকে সন্তুষ্ট রাখা। ওই স্বৈরশাসকের শাসনামলে ইরানের কোনো অগ্রগতি হয়নি বরং শাহ সরকার দেশকে বহুগুণে পিছিয়ে দিয়েছিল।
রায়িসি বলেন, বর্তমানে আমেরিকার কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অর্থনীতির সবগুলো সূচকে ইরানের প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক। তিনি বলেন, তেল ও তেলজাত পণ্যের পাশাপাশি ইরানের কোনো রপ্তানি খাতই আজ থেমে নেই। ইরানের জন্য এক উজ্জ্বল ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট তার ভাষণের শেষাংশে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ব্যাপক হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এই দুর্দিনে আঙ্কারা ও দামেস্কের পাশে রয়েছে তেহরান। ইরান থেকে এ পর্যন্ত কয়েক দফায় ত্রাণ ও উদ্ধারসামগ্রী পাঠানোর কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট রায়িসি বলেন, তার দেশের পক্ষ থেকে সাহায্য সামগ্রী পাঠানো অব্যাহত থাকবে।#
পার্সটুডে/এমএমআই/এনএম/১১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।