ইরানে বিশৃঙ্খলা ও গোলযোগ সৃষ্টি করতে শত্রু গণমাধ্যমগুলোর ব্যর্থতার নেপথ্যে
এক মাসেরও কম সময় আগে ইরান বিরোধী গণমাধ্যমগুলো দেশটিতে বিশৃঙ্খলা ও গোলযোগ সৃষ্টি করার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু ইরানের বিভিন্ন শহরে সাম্প্রতিক দিনগুলিতে শান্ত পরিস্থিতি বজায় থাকার মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে শত্রুদের সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে।
এক বছর আগে মাহসা আমিনি নামে এক কুর্দি তরুণীর মৃত্যুর পর ইরানের বিভিন্ন শহর বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ইরানের কয়েকটি শহরে ১০০ দিনের বেশি অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা অব্যাহত থাকলেও শেষ পর্যন্ত ইরানে বিশৃঙ্খলা স্থায়ী করার শত্রুদের প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে। এখন বিরোধী মিডিয়া এবং কুচক্রি মহল ইরানকে আবারো বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতার দৃশ্যে পরিণত করার জন্য হর্ন ফুঁকছে। কিন্তু এবারও তারা ব্যর্থ হয়েছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে তাদের এবারের ব্যর্থতা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি তীব্র এবং তাদের জন্য বেদনাদায়ক। কারণ ইরানের জনগণ শত্রুদের পরিকল্পিত কর্মসূচির আসল লক্ষ্য উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে তাদের সঙ্গে সবচেয়ে কম সহযোগিতা করেছে।
নিঃসন্দেহে বিরোধীদের পরাজয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে ইরানি জনগণ এবং ইসলামী ব্যবস্থা সম্পর্কে তাদের অজ্ঞতা। শত্রুদের জানা উচিত যে ইরানে ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থার গঠন হয়েছে দেশটির জনগণের ইচ্ছার উপর ভিত্তি করে এবং এটা স্বাভাবিক যে জনগণ বিশেষ করে অর্থনীতির ক্ষেত্রে অসন্তোষ থাকা সত্ত্বেও বিপ্লবের আদর্শের বিরুদ্ধে তারা কখনই আন্দোলন করবে না। প্রকৃতপক্ষে বিরোধী ব্যক্তিরা ইসলামি প্রজাতন্ত্রের জনগণ এবং ব্যবস্থার মধ্যে ঐক্য ও সংহতি বুঝতে সক্ষম নয় এবং তারা কেবল কিছু অসন্তোষ ও ঘাটতির দিকে মনোনিবেশ করছে।
ইরানের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের ব্যর্থতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল বিরোধীদের আসল চেহারা এবং তাদের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্যকে বুঝতে না পারা। গত ৯ মাসে জনগণ বুঝতে পেরেছে যে শত্রুদের উদ্বেগ জনগণকে রক্ষা করা নয়, যেকোনো মূল্যে ক্ষমতা অর্জন করা।এমনকি পশ্চিমা গণ মাধ্যমগুলো ইরানের আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিভাজন সৃষ্টি করতে চেয়েছিল যা ইরানের জনগণের জন্য তা ছিল রেড লাইন। উপরন্তু এটা স্পষ্ট হয়ে গেল যে বিরোধীদের প্রচারের ক্ষমতা আছে কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনে এসবের কোনো প্রভাব নেই। প্রকৃতপক্ষে ইরানী জনগণের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনা সম্পর্কে তাদের কোন বোধগম্যতা নেই।
আরেকটি বিষয় হল যে বিরোধীদের পক্ষে একীভূত এবং গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বের অভাবের বিপরীতে এই অবস্থানে একটি জ্ঞানী এবং বুদ্ধিমান নেতৃত্ব ইরানের সমাজ পরিচালনার শীর্ষে রয়েছে। ইসলামি বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা বারবার জনগণের দাবির সমাধান ও তাদেরকে সন্তুষ্টি করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে আসছেন এবং ইরানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার শত্রুদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সিস্তান ও বেলুচিস্তান এবং দক্ষিণ খোরাসানের জনগণের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকে সর্বোচ্চ নেতা ইরানি জনগণের মধ্যে ঐক্য ও জাতীয় নিরাপত্তার ওপর তার জোর দেয়ার মাধ্যমে এর ইঙ্গিত মিলে।
চূড়ান্ত বিষয় হল গত বছরের দাঙ্গায় শত্রুরা ইরানী সমাজের বিশ্বাসযোগ্যতা ও আশার দিকে ইঙ্গিত করে জনগণের সামনে একটি ভার্চুয়াল মরীচিকা তুলে ধরতে চেয়েছিল কিন্তু ইরানি সচেতন জনগণ বরাবরের মতোই দৃশ্যটির বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পেরেছিল।#
পার্সটুডে/বাবুল আখতার/১৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।