যিশু খ্রিস্টকে অপমান করায় ইরানি এক্স ইউজারদের কঠোর সমালোচনা
(last modified Tue, 30 Jul 2024 03:43:12 GMT )
জুলাই ৩০, ২০২৪ ০৯:৪৩ Asia/Dhaka
  • তেহরানের সেন্ট সারকিস চার্চ (ডানে), প্যারিস অলিম্পিকে যিশু খ্রিস্টের অবমাননার একটি অস্পষ্ট চিত্র (বামে)
    তেহরানের সেন্ট সারকিস চার্চ (ডানে), প্যারিস অলিম্পিকে যিশু খ্রিস্টের অবমাননার একটি অস্পষ্ট চিত্র (বামে)

পার্সটুডে- এক্স সোশ্যাল নেটওয়ার্কের (সাবেক টুইটার) ইরানি ইউজাররা প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে হযরত ঈসা মাসিহ (আ.) বা যিশু খ্রিস্টের অবমাননার তীব্র সমালোচনা করেছেন এবং এটিকে অলিম্পিকের ইতিহাসের জঘন্যতম দৃশ্য বলে অভিহিত করেছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় (২৬ জুলাই) সেন্ট-প্যারিস নদীতে ৬.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাব্যাপী একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারিস অলিম্পিক-২০২৪ শুরু হয়। এতে বিভিন্ন দেশের ক্রীড়াবিদরা নৌকা ভ্রমণের মাধ্যমে দর্শকদের সামনে আবির্ভুত হন।  পার্সটুডে ফার্সি জানাচ্ছে, এই উদ্বোধনি অনুষ্ঠানটি আগের অলিম্পিকগুলো মতো ছিল না। কারণ, এ যাবত যত অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখানে উদ্বোধনি অনুষ্ঠান সব সময় আয়োজক দেশগুলির যেকোনো একটি মূল স্টেডিয়ামের ভেতরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এবারের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে স্টেডিয়ামের বাইরে প্যারিস শহরের আউটডোরে।

মিউজিক্যাল বা থিয়েটারের দৃশ্যে অজানা সমকামী চরিত্রের প্রবেশ, বিশ্বের শত শত কোটি মানুষের, বিশেষ করে খ্রিস্টানদের নৈতিকতা ও ধর্মের অবমাননা করে আপত্তিকর দৃশ্যের অবতারণা ছিল প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানের একটি অংশ। এসব দৃশ্য দেখে বিশ্ববাসী নিজেদের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেননি।

এই অনুষ্ঠানে, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি’র বিখ্যাত শিল্পকর্ম যা যীশু খ্রীষ্টের দ্যা লাস্ট সাপার বা শেষ নৈশভোজ বলে পরিচিত, তাকে সমকামী উপাদান ব্যবহার করে মঞ্চস্থ করা হয় এবং এই ঐশী নবী ও খ্রিস্টান ধর্মকে অপমান করা হয়।  বিশ্বের কোনো ধর্মের অনুসারী মানুষই এমন দৃশ্য দেখতে চাননি বরং এসব দৃশ্য দেখে তারা সমালোচনায় ফেটে পড়েন।

ইরানি এক্স নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীরাও প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাদের কয়েকটি প্রতিক্রিয়া এখানে তুলে ধরা হচ্ছে:

এটি স্বাধীনতা নয়

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এক্স-এর পেগাহ মিলান নামের একজন ইরানি ইউজার হযরত ঈসা (আ.)-এর অনুসারীদের অপমান করাকে ইতিহাস, বিশ্বাস ও সংস্কৃতির অপমান বলে অভিহিত করেছেন। তিনি লিখেছেন:

এটি ছিল খ্রিস্টের অনুসারীদের সবচেয়ে বড় অপমান। এটাকে স্বাধীনতা বলে না। না, না, এটা ইতিহাস, বিশ্বাস ও সংস্কৃতির অপমান।

চরম অশ্লীলতা

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এক্স-এর আরেকজন ইরানি ইউজার আলী প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে ঈসা মসীহ (আ.)-এর অবমাননাকে চূড়ান্ত অশ্লীলতা বলে মনে করেন। তিনি লিখেছেন:

২০২৪ ফরাসি অলিম্পিকে চূড়ান্ত অশ্লীলতা প্রদর্শন করা হয়। যিশু খ্রিস্টের চিত্রকর্মের প্রদর্শনীতে পশ্চিমা সংস্কৃতির চরম অধোঃপতন পরিলক্ষিত হয়।  ঘনিষ্ঠজন বা হাওয়ারিদের সঙ্গে যীশু খ্রিস্টের বিখ্যাত চিত্রকর্মের যে ভার্সনটি প্রদর্শন করা হয় তাতে একজন স্থুলকায় পতিতাকে যীশু খ্রীষ্টের জায়গায় স্থাপন করা হয় যার চারপাশে একদল সমকামী পুরুষ এবং নারী ঘুরপাক খাচ্ছে।

ইতিহাসের সবচেয়ে কুৎসিত অলিম্পিক

এক্স সোশ্যাল নেটওয়ার্কের ইরানি ব্যবহারকারী মোনতাজের মাহদি প্যারিস অলিম্পিককে ইতিহাসের কুৎসিততম অলিম্পিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন:

প্যারিস অলিম্পিক ইতিহাসের সবচেয়ে কুৎসিত অলিম্পিকের একটি। এই অলিম্পিকের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত কুৎসিত জিনিসগুলির একটি ছিল খ্রিস্টকে অপমান করা।

যিশুকে অবমাননা করে মুসলমানদেরও অপমান করা হয়েছে

ইরানি এক্স ইউজার মোহাম্মাদ অলিম্পিকের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে হযরত ঈসা মাসিহ (আ.)-এর অবমাননাকে মুসলমানদের অপমান হিসেবে বিবেচনা করছেন। তিনি লিখেছেন:

যিশুর অবমাননা করে আমাদের মুসলমানদেরও অপমান করা হয়েছে। যে কোন ঐশী নবীর অপমান আমাদের জন্য অপমান। ইসলাম মহান আল্লাহর আদেশের সামনে বশ্যতা ছাড়া কিছুই নয় এবং পৃথিবীতে যে কেউ আল্লাহর আদেশের বশ্যতা স্বীকার করে সে আমাদের বন্ধু এবং তাকে সমর্থন করা আমাদের কর্তব্য।

এ প্রসঙ্গে, পারভানে নামের একজন ইউজার লিখেছেন:

একজন মুসলিম হিসেবে, আমি যীশু এবং খ্রিস্টান ধর্মের এই জঘন্য অপমানে ক্ষুব্ধ... একজন খ্রিস্টান হিসাবে এ সম্পর্কে আপনার অনুভুতি কী?

হযরত ঈসা মাসিহর অবমাননার জন্য জবাবদিহী করা উচিত

ফাতেমা মোনতাজার আল-মাহদি নামক ইরানের একজন এক্স ইউজার প্যারিস অলিম্পিকে যীশু খ্রিস্টর অবমাননার জবাবদিহীতার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন:

২০২৪ সালের অলিম্পিকে ধর্মীয় পবিত্রতা ও যিশুর অপমান করা হয়েছে।  এই নির্লজ্জ অবমাননা যারা করেছে তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহীতার আওতায় আনা উচিত।

অভিশাপ এই শয়তানি অলিম্পিকের প্রতি

মোহাম্মাদ হোলমাজ নামের একজন ইউজার এক টুইটে প্যারিস অলিম্পিকের আয়োজকদের সমালোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন:

একজন মুসলিম হিসেবে আমার সত্যিই খারাপ লেগেছে! কেন কিছু যৌন বিকারগ্রস্ত মানুষ অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে যীশুকে অপমান করবে?! অভিশাপ ফরাসি সরকার ও এই শয়তানি অলিম্পিকের প্রতি!

পার্সটুডে/এমএমআই/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন

ট্যাগ