পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে ইমাম খামেনেয়ী: আমরা মুসলিম বিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী
-
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার সাক্ষাৎ
পার্সটুডে: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী জোর দিয়ে বলেছেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ও পাকিস্তান একসাথে কাজ করলে মুসলিম বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে এবং ফিলিস্তিন ইস্যুকে ভুল পথ থেকে বের করে আনতে পারবে। তিনি বলেন, "আমরা মুসলিম বিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী এবং অনেক ঘটনাই আমাদের এই আশাবাদকে সমর্থন করে।"
পার্সটুডের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের ইসলামী বিপ্লবের মহান নেতা গতকাল (সোমবার) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ও তাঁর প্রতিনিধিদলের সাথে সাক্ষাৎকালে ইসলামী বিশ্বে পাকিস্তানের বিশেষ অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন এবং গাজায় ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের অপরাধ বন্ধে ইরান ও পাকিস্তানের যৌথ ও কার্যকর ভূমিকার ওপর জোর দেন।
সাক্ষাতের শুরুতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধের অবসান এবং দুই দেশের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তির আশাবাদ ব্যক্ত করে গত কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিন ইস্যুতে পাকিস্তানের দৃঢ় ও ইতিবাচক অবস্থানের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, "গত কয়েক বছরে বিভিন্ন মুসলিম দেশকে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের প্রলোভন দেখানো হলেও পাকিস্তান কখনই এই প্রলোভনে পা দেয়নি।"
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ইসলামী উম্মাহর সক্ষমতার কথা উল্লেখ করে বলেন, "বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধপ্রিয় শক্তিগুলো বিভেদ ও সংঘাত সৃষ্টির জন্য বিভিন্নভাবে প্ররোচিত করছে। একমাত্র ইসলামী দেশগুলোর ঐক্য ও আন্তঃসংযোগই মুসলিম উম্মাহর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।"
তিনি ফিলিস্তিন ইস্যুকে ইসলামী বিশ্বের প্রধান ইস্যু আখ্যায়িত করে গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, "গাজার পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, ইউরোপ ও আমেরিকার সাধারণ মানুষও রাস্তায় নেমে তাদের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই পরিস্থিতিতেও কিছু মুসলিম দেশ ইসরাইলের পাশে দাঁড়িয়েছে।"
ইসলামী বিপ্লবের নেতা পাকিস্তান-ইরান সম্পর্ককে সর্বদা উষ্ণ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের ইতিবাচক ভূমিকার উদাহরণ দেন। তবে তিনি বর্তমান সময়ে দুই দেশের সহযোগিতাকে প্রত্যাশিত স্তরের নিচে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, "বর্তমান সহযোগিতা প্রত্যাশিত মানের চেয়ে কম, দুই দেশ আরও অনেক ক্ষেত্রে একে অপরের সহযোগিতা করতে পারে। আশা করা যায়, এই সফর দুই দেশের মধ্যে বিশেষ করে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে আরও সম্প্রসারণ করবে।"
তিনি অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা- ইকো (ECO)-কে আরও সক্রিয় করতে ইরান-পাকিস্তানের সমন্বিত প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন।
এই সাক্ষাতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ডা. মাসুদ পেজেশকিয়ানও উপস্থিত ছিলেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ইসলামী বিপ্লবের নেতার সাথে সাক্ষাতের সৌভাগ্য লাভে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনা প্রশমনে ইরানের ইতিবাচক ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি সাম্প্রতিক সংঘাতের ঘটনাগুলো উল্লেখ করে গাজার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, "দুঃখজনকভাবে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজার বিপর্যয় রোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।"
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তেহরানে তার সফল ও গঠনমূলক আলোচনার কথা উল্লেখ করে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই সফর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও প্রসারিত করবে।#
পার্সটুডে/এমএআর/২৭