ইমাম খোমেনী আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়: বিদেশি শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান
-
ইমাম খোমেনী (রহ.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়
পার্সটুডে: ইরানের উত্তরাঞ্চলের কাজভিন শহরে অবস্থিত ইমাম খোমেনী (রহ.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থীদেরকে আতিথ্য প্রদান করে আসছে।
আপনি যদি ইরানের একটি স্বনামধন্য ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার কথা ভাবেন, তবে কাজভিনের ইমাম খোমেনী (রহ.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে আপনার জন্য সঠিক নির্বাচন।
পার্সটুডে'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইরানের বিজ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। 'বৃহৎ জ্ঞান এবং উচ্চ মনোবল' এই স্লোগান পরিচিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টির লক্ষ্য হলো ইসলামী ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে উচ্চশিক্ষার প্রসার ঘটানো।

অবকাঠামো ও আবাসন
ইমাম খোমেনী (রহ.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৯টি আবাসিক হল রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি ছাত্রীদের জন্য এবং ৫টি ছাত্রদের জন্য। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত আরও ৩টি স্বনির্ভর হোস্টেলে প্রায় ৩৪০ জন শিক্ষার্থী বসবাস করছে।
বহুজাতিক একাডেমিক পরিবেশ
বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইরান ও বিভিন্ন দেশের ৮ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে, যা একে বৈজ্ঞানিক, সাংস্কৃতিক ও বহুজাতিক পরিবেশে পরিণত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বব্যাপী ইসলামী জ্ঞান ও শিক্ষার প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন বিষয়ের উপর স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও গবেষণামূলক পড়াশোনার সুযোগ প্রদান করছে। বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে মানবিক বিজ্ঞান, প্রকৌশল, মৌলিক বিজ্ঞান, শিল্পকলা, ফারসি ভাষা, ইসলামি স্টাডিজ এবং আন্তঃশাস্ত্রীয় বিষয়।

ভর্তি ও বৃত্তি
বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় সরকারি বৃত্তি, বিশ্ববিদ্যালয় বৃত্তি, জাতীয় ভর্তি পরীক্ষা এবং স্বতন্ত্র (ফ্রি) ভর্তি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। আবেদনকারীদের বৈধ একাডেমিক সনদ, শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার প্রমাণ এবং ইংরেজি বা আরবি ভাষায় অনূদিত শিক্ষাগত নথি জমা দিতে হয়। অনেক বিদেশি শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারসি ভাষা শিক্ষার কোর্স সম্পন্ন করতে হয়।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে স্পেন, রাশিয়া, চীনসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা রয়েছে এবং এখানে ইসলামি ও এশীয় দেশগুলির বহু শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্ব
গত শনিবার, ইরানের সংসদ সদস্য 'সালার আবনুশ' ইমাম খোমেনী (রহঃ) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর ও পরিচালকদের সাথে এক সাক্ষাতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন: এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের 'আন্তর্জাতিক' পরিচিতি বিশ্বব্যাপী এর ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনার দায়িত্ব বহুলাংশে বাড়িয়ে দেয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক সামর্থ্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি বিশ্বমানের কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে চিন্তার আদান-প্রদান, মেধাবী তৈরি ও বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মে পরিণত হতে পারে।
কাজভিন, আলবোর্জ ও আবিক অঞ্চলের এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ইমাম খোমেনী (রহ.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে একাডেমিক সম্পর্ক জোরদার করে ইরানের বৈজ্ঞানিক কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।#
পার্সটুডে/এমএআর/১৮