ফের তেলবাহী জাহাজে হামলা বি-টিমের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের ফল
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজাইরা বন্দরে গত ১২মে কয়েকটি তেলবাহী জাহাজে হামলার পর গতকাল (বৃহস্পতিবার) ফের ওমান সাগরে আরো দু'টি তেলবাহী জাহাজে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণ ও আলামতে দেখা যাচ্ছে, কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে এ হামলা চালানো হয়নি। আবার কোনো কোনো মার্কিন ও আরব দেশের কর্মকর্তারা ও তাদের গণমাধ্যমগুলো এ ঘটনার দায় ইরানের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে। তারা এও দাবি করেছে, সমুদ্র মাইন এবং টর্পেডোর আঘাতে জাহাজ দু'টিতে আগুন লাগে। তবে জাপানের শিপিং কোম্পানির প্রধান ইউতাকা কাতাদা এ ধরণের সম্ভাবনাকে নাকোচ করে দিয়েছেন। তিনি মাইনের সঙ্গে জাহাজের ধাক্কা লাগার বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে পানির স্তরের উপরের দিকের অংশে জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থাৎ সেটা মাইনের আঘাত ছিল না।
এদিকে, ওমান সাগরে দু'টি তেলবাহী জাহাজে হামলার পরপরই আমেরিকার আহ্বানে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরান বিরোধী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও'র ওই প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। আমেরিকা ও তার মিত্রদের মনস্তাত্বিক প্রচারণার বিষয়টি বাদ দিয়ে বলা যায় ওমান সাগরে তেলবাহী দু'টি জাহাজে হামলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত এবং ধ্বংসাত্মক কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো ও পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের আগুন লাগানোই এর উদ্দেশ্য।
এ ঘটনায় ইরানকে জড়ানোর জন্য মার্কিন প্রচেষ্টার ব্যাপারে এক প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, কোনো প্রমাণ ছাড়াই আমেরিকা ইরানকে দায়ী করা থেকে বোঝা যায় এর পেছনে বি-টিমের ভূমিকা রয়েছে।

ইরানের বিরুদ্ধে চলমান অর্থনৈতিক যুদ্ধকে আড়াল করা ও ধ্বংসাত্মক কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। আমেরিকা ও তার মিত্ররা যে ধ্বংসাত্মক কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে সে প্রসঙ্গে বলা যায়, এমন সময় এ তেলবাহী জাহাজে টর্পেডো হামলা হয়েছে যখন তেহরানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে সাক্ষাতে মিলিত হন।
দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, জাহাজ দু'টি করে জাপানের জন্য জ্বালানি তেল নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। একটি জাহাজে হামলার পরও যখন সেটি ডুবে যায়নি তখন আবারো ওই জাহাজে হামলা চালানো হয় যাতে সেটি ডুবে যায়। অর্থাৎ হামলাকারীরা যেভাবেই হোক জাপানের তেলবাহী জাহাজ ডুবিয়ে দিতে চেয়েছিল। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রীর তেহরান সফরের একই সময়ে জাহাজে হামলার ঘটনা সন্দেহজনক।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং আমিরাতের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন যেইদ এই চার ব্যক্তিকে বি-টিমের সদস্য বলে জারিফ উল্লেখ করেছেন।
বি-টিমের সদস্যরা ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে রাজি করানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। এ কারণে তারা এখন ধ্বংসাত্মক কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে এবং নিজেদের গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে ইরানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং ট্রাম্পকে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার জন্য এখনো রাজি করানোর চেষ্টা করছেন। #
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৪