মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ; "আমরা ইরানিদের পাশে রয়েছি": মাইক পেন্স
-
মাইক পেন্স
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে আমেরিকার ইরান বিদ্বেষ কয়েকগুণ বেড়েছে। তেহরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টি করে ওয়াশিংটনের অন্যায্য দাবি মেনে নিতে বাধ্য করার চেষ্টা করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এ কারণে আমেরিকা সুযোগ পেলেই বিভিন্ন ইস্যুতে ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের পাশাপাশি দেশটির জনগণের বন্ধু সাজার ভান করে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রণালয় এবং হোয়াইট হাউজ ইরানে সম্প্রতি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের প্রতি সমর্থন দেয়ার পর এখন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স কথা বলা শুরু করেছেন যিনি কিনা ইরানের জনগণের সমর্থক বলে দাবি করে আসছেন। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স আজ টুইটারে দেয়া এক বার্তায় বলেছেন, "যুক্তরাষ্ট্রের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে তারা ইরানের জনগণের পাশে রয়েছে।"
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এমন সময় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স এ বক্তব্য দিলেন যখন মার্কিন একতরফা নিষেধাজ্ঞার কারণে ওষুধসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ইরানে আসতে পারছে না যা কিনা ইরানের জনগণের জন্য বিরাট সংকট তৈরি করেছে। তাদের মতে, মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের জনগণের প্রতি সমর্থন দেয়ার কথা বললেও বাস্তবতা হচ্ছে ইরানের বর্তমান আর্থিক সংকট ও জনগণের দুঃখ-দুর্দশার জন্য সরাসরি আমেরিকানরা দায়ী।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও কিছুদিন আগে ইরানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের প্রতি সমর্থন দিয়ে ভাঙচুর ও ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চালানো অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি গতকাল বুধবার ন্যাটো জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে বলেছেন, "আমেরিকার সঙ্গে চীন, রাশিয়া ও ইরানের রাষ্ট্রীয় আদর্শের কোনো মিল নেই এবং তারা আমাদের নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।"
মার্কিন কর্মকর্তারা এমন সময় ইরানের জনগণের প্রতি সমর্থন দাবি করছেন যখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বহুবার ইরানের জনগণকে সন্ত্রাসী জাতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা সারা লি ভিতসুন বলেছেন, "মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও যদি সত্যিই ইরানের জনগণকে সহায়তা করতে চান তাহলে দেশটির ওপর থেকে অবশ্যই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। কারণ মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ইরানের জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।"

সম্প্রতি ইরানে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর অজুহাতে কিছুসংখ্যক দুস্কৃতিকারী গত শুক্রবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
আমেরিকা ও তার কয়েকটি ইউরোপীয় মিত্র দেশ এ সুযোগে ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ও সন্ত্রাসীদের প্রতি সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি ইরান সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে ইরানে সহিংসতা ও গোলযোগ সৃষ্টির পেছনে পাশ্চাত্যের উস্কানি ছিল। যেভাবে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করা হয়েছে তাতে বোঝা যায়, এটা কোনো সাধারণ মানুষের কাজ ছিল না বরং পূর্ব থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়ে একদল ব্যক্তি ওত পেতে ছিল এবং সুযোগ মতো ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।
তেহরানের কর্মকর্তারা মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানে বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিতে চেয়েছিল। তাদের মতে, ইরানের ব্যাপারে মার্কিন হস্তক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। #
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২১