‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ ফিলিস্তিনের সঙ্গে ‘শতাব্দির সেরা বিশ্বাসঘাতকতা’: ইরান
(last modified Wed, 29 Jan 2020 02:21:48 GMT )
জানুয়ারি ২৯, ২০২০ ০৮:২১ Asia/Dhaka
  • মুসলমানদের প্রথম ক্বেবলা মসজিদুল আকসার শহর জেরুজালেম আল-কুদসকে এই পরিলকল্পনায় ইসরাইলকে দিয়ে দেয়া হয়েছে
    মুসলমানদের প্রথম ক্বেবলা মসজিদুল আকসার শহর জেরুজালেম আল-কুদসকে এই পরিলকল্পনায় ইসরাইলকে দিয়ে দেয়া হয়েছে

আমেরিকার পক্ষ থেকে উত্থাপিত ‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ বা কথিত ‘শতাব্দির সেরা চুক্তি’কে ‘শতাব্দির সেরা বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে উল্লেখ করেছে ইরান। তেহরান বলেছে, ফিলিস্তিনিদের ওপর আমেরিকার পক্ষ থেকে চাপিয়ে দেয়া এই লজ্জাজনক শান্তি পরিকল্পনা ব্যর্থ হতে বাধ্য।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইয়্যেদ আব্বাস মুসাভি মঙ্গলবার রাতে এক প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ পরিকল্পনা উত্থাপন করে মূলত ফিলিস্তিনি জনগণের পাশাপাশি গোটা মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। মুসাভি এ পরিকল্পনা প্রতিহত করার জন্য মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বের স্বাধীনচেতা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

ফিলিস্তিনি জনগণকে ইসরাইলসহ গোটা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের প্রকৃত মালিক বলে উল্লেখ করেন সাইয়্যেদ মুসাভি। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি ভূমি জবরদখল করে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কাজেই সেখানকার সংকট সমাধানের একমাত্র উপায় ফিলিস্তিনের প্রকৃত অধিবাসী মুসলমান, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের মধ্যে গণভোটের ব্যবস্থা করা যাতে তারা নিজের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে আনা অবৈধ ইহুদি অভিবাসীদেরকে এই গণভোটের বাইরে রাখতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইয়্যেদ আব্বাস মুসাভি

ইরানের দৃষ্টিতে ফিলিস্তিন ও জেরুজালেম আল-কুদসকে মুসলিম বিশ্বের এক নম্বর সমস্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেন ইরানের এই মুখপাত্র। তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে কিছু মুসলিম দেশ ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার সম্পূর্ণ উপেক্ষা করার এই পরিকল্পনা মেনে নিয়েছে।

ফিলিস্তিনিদের প্রবল বিরোধিতা উপেক্ষা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত ইহুদিবাদী পরিকল্পনা ‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ উপস্থাপন করেছেন।তিনি মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়ে তার একপেশে এই আপোষ প্রক্রিয়া উপস্থাপন করেন।

ফিলিস্তিনের স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস

মার্কিন-ইহুদিবাদী এই পরিকল্পনায় ঐতিহাসিক জেরুজালেম আল-কুদস শহরকে ইসরাইলি ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।সেইসঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত ফিলিস্তিনি শরণার্থীদেরকে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ ছাড়া, জর্দান নদীর পশ্চিম তীরের অবশিষ্ট অংশ ও গাজা উপত্যকা নিয়ে একটি দুর্বল ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে।

ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি বিশ্বের বহু মুসলিম দেশ ট্রাম্পের এই একতরফা বা বর্ণবাদী পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে। ফিলিস্তিনের স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “আমি হাজার বার বলেছি, এ পরিকল্পনা মানি না, মানি না, মানি না।” ‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ উপস্থাপনের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাকে টেলিফোন করলেও তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেছেন, যে পরিকল্পনায় জেরুজালেম আল-কুদসকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা না থাকছে সে পরিকল্পনা তিনি মেনে নেবেন না।#

পার্সটুডে/এমএমআই/২৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।