ইরানের সংসদীয় বিবৃতিতে আণবিক শক্তি সংস্থার প্রস্তাবের নিন্দা
-
ইরানের সংসদ
পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি বা এনপিটি'র জন্মের অর্ধ শতাব্দির ইতিহাসে এই সংস্থার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতাকারী দেশ ইরানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার নির্বাহী পরিষদ যে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে ওই প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়েছে ইরানের সংসদ। ইরান ওই প্রস্তাবকে 'সুস্পষ্ট উচ্চাভিলাষ' বলে মন্তব্য করেছে।
গতকাল ইরানের সংসদে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি গ্রহণ করা হয়। ওই বিবৃতিতে ইরানের বিরুদ্ধে আইএইএ'র অবস্থানের নিন্দা জানানো হয় এবং এই অবস্থানকে সংস্থাটিতে বিদ্যমান কাঠামোগত বৈষম্যের আরেকটি নমুনা হিসেবে মন্তব্য করা হয়েছে। ইউরোপের ত্রোইকা ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং জার্মানির পক্ষ থেকে ইরান বিষয়ক যে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে ১৯ জুন শুক্রবার আইএইএ'র নির্বাহী পরিষদে তা গৃহীত হয়েছে। ওই প্রস্তাবে আইএইএ ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তাদের দুটি পরমাণু স্থাপনা পরিদর্শনের ব্যাপারে সংস্থাটির সঙ্গে যেন পরিপূর্ণ সহযোগিতা করে। আইএইএ'র বিরল এই প্রস্তাবটি ইহুদিবাদী ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মিথ্যা, জাল ও বানোয়াট তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। ইরানের সংসদীয় বিবৃতিতে ওই বানোয়াট, মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা প্রস্তাবে দেওয়া চাপের কাছে কোনোভাবেই মাথানত করা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইরান পরমাণু সমঝোতা অনুযায়ী আইএইএ'র সঙ্গে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে। আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটির কাছে কোনো কিছুই গোপন করে নি ইরান। এমনকি একথাও বারবার বলে এসেছে যে পরমাণু অস্ত্রের কোনো প্রয়োজন ইরানের নেই। ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়া অনুযায়ী পরমাণু অস্ত্রের মতো গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র তৈরি করা, মজুদ করা কিংবা ব্যবহার করা সম্পূর্ণ হারাম। এই ফতোয়ার মাধ্যমে পারমাণবিক তৎপরতার ক্ষেত্রে ইরানের লক্ষ্য ও কার্যক্রম পুরোপুরি স্বচ্ছ ও স্পষ্ট হয়ে যায়। সুতরাং ইউরোপের ওই তিন দেশ এ ধরনের প্রস্তাব দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা আমেরিকার চাপের কাছে অত্যন্ত দুর্বল, অবনত এবং ভঙ্গুর। আর এ কারণেই তারা মার্কিন একাধিপত্যের মোকাবেলায় নিজেদের স্থির অবস্থান গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে।
ইউরোপীয় ওই তিন দেশের অবস্থানকে তাদের কথা এবং কাজের মধ্যকার বৈষম্যের প্রমাণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। সেইসঙ্গে এটাও প্রমাণ হয়েছে যে জার্মানি ফ্রান্স এবং ব্রিটেন আমেরিকা ও ইসরাইলের ফাঁদে আটকা পড়েছে।
গত পাঁচ বছরে অন্তত ত্রিশবার ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করেছে। আইএইএ'র ইতিহাসে ওইসব পরিদর্শন ছিল সবচেয়ে কঠিন চিরুনি অভিযানের মতো। তাদের প্রতিবেদনে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ বলে উল্লেখ করার পরও সেগুলোকে উপেক্ষা করে ইরানের ওপর অন্যায় চাপ দেওয়ার ঘটনা ইরানের সঙ্গে এই সংস্থার সহযোগিতাকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করারই নামান্তর। নি:সন্দেহে সেরকম অসহযোগের দায় বর্তাবে এই প্রস্তাব গ্রহণকারীদের ওপর।#
পার্সটুডে/এনএম/২২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।