'ইরান পরিস্থিতি নিয়ে সাক্ষাৎকারটি শুনে অনেক মানুষের ভুল ভাঙবে'
(last modified Sun, 09 Oct 2022 15:13:57 GMT )
অক্টোবর ০৯, ২০২২ ২১:১৩ Asia/Dhaka
  • 'ইরান পরিস্থিতি নিয়ে সাক্ষাৎকারটি শুনে অনেক মানুষের ভুল ভাঙবে'

প্রিয় মহোদয়, আসসালামু আলাইকুম। আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানবেন। ৭ অক্টোবর, শুক্রবার রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগ থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলো হল- বিশ্বসংবাদ, দৃষ্টিপাত, সুন্দর জীবন, কথাবার্তা ও আলাপন। তন্মধ্যে সাক্ষাৎকারভিত্তিক সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান আলাপন আমাদের খুব ভালো লেগেছে।

কেননা মাহসা আমিনির মৃত্যু ও এর ভিত্তিতে ইরানজুড়ে সহিংসতা শুধু ‘টক অব দ্যা ইরান’ নয়, বরং ‘টব অব দ্যা ওয়ার্ল্ড’। তাই এ বিষয়ে সঠিক তথ্য ও নির্মোহ বিশ্লেষণ বিশ্ববাসীকে জানানো দরকার ছিল। 

আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, এই সাক্ষাৎকারটি শুনে অনেক মানুষের ভুল ভাঙবে, তারা প্রকৃত সত্য ও ঘটনার পেছনের ঘটনা জানতে পারবেন। গাজী আব্দুর রশিদের উপস্থাপনায় ইরান বিশেষজ্ঞ মো. মুনির হোসাইন খান চমৎকারভাবে ইসরাইল-আমেরিকা-ইউরোপের ষড়যন্ত্রের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। আমি মনে করি উক্ত অনুষ্ঠানটি ডাবিং করে রেডিও তেহরানের অন্যান্য ভাষায়ও প্রচার করা উচিত। আর সকল ভাষার ওয়েবসাইটে তো দেয়া অত্যাবশ্যক।

উপস্থাপক গাজী গাজী আব্দুর রশিদের প্রথম প্রশ্নের উত্তরে জনাব মুনির হুসাইন স্পষ্ট করেই বলেন যে, মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরানে যা চলছে তাকে কোনো অবস্থাতেই আন্দোলন বলা যাবে না, এটি বরং সুপরিকল্পিত সহিংসতা। আমরা শ্রোতারা তাঁর এ কথার সাথে সহমত পোষণ করছি। কেননা, যে কোন আন্দোলনে একটি সুষ্পষ্ট লক্ষ্য থাকে। কিন্তু পোশাকের স্বাধীনতার নামে হিজাব বিরোধী সহিংসতাকারীদের তেমন কোন লক্ষ্য নেই। না, ভুল বলেছি। তাদের একটি লক্ষ্য আছে; আর তা হল ইসরাইল-আমেরিকা-ইউরোপের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে ইরানে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা।

ইরান বর্তমান বিশ্বে একটি শক্তিশালী দেশ। নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ইরান সামরিক-অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অগ্রগতি লাভ করছে। পশ্চিমা বিশ্বের এটি সহ্য হচ্ছে না। তাই ইরানে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে তারা ইরানের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করতে চায়। আর ইরানের কিছু লোক না বুঝে, অথবা ইসরাইল-আমেরিকা-ইউরোপের সাথে আঁতাতের কারণে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

মজার ব্যাপার হল, বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ইরানের নারীরা অনেক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করে। জনাব মুনির ঠিকই বলেছেন যে, ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানের নারীরা পুরুষদের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত আছে। ইরানে সরকারি চাকরি, স্কুল- কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, গবেষণা কর্ম সর্বত্রই নারীদের উপস্থিতি রয়েছে। এমনকি ক্রীড়া জগতেও ইসলামি হিজাব পরে নারীরা অলিম্পিকসহ বহু আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রঞ্জ মেডেল পেয়েছেন। আসলে হিজাব নারীকে সামাজিক মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

তাহলে বিশৃঙ্খলাকারীদের দাবিটা কি? তাদের দাবি- ইরান থেকে ইসলামি শাসনব্যবস্থা উঠিয়ে দেয়ার। তাদের দাবি- পশ্চিমা অসামাজিক জীবন পদ্ধতি চালু করার। তাদের দাবি ইহুদিদের সাথে আঁতাত করার। কিন্তু মুসলিম উম্মাহর পতাকাধারী ইরান তো তা করবে না, করতে পারে না। আর সেজন্যই ইসরাইল-আমেরিকা-ইউরোপের স্থানীয় এজেন্টরা ইরানের ভেতরে অশান্তি, গোলযোগ, দাঙ্গা, সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে এবং বর্তমানেও তা অব্যাহত রেখেছে।

পরিশেষে, এমন সুন্দর ও তথ্যবহুল একটি অনুষ্ঠান প্রচার করায় রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই আজকের অতিথি ইরান প্রবাসী বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, গবেষক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার মো.মুনীর হুসাইন খানকেও।

 

ধন্যবাদান্তে,  

মোঃ শাহাদত হোসেন

সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ

গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ।  

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ