শ্রোতাদের মতামত
'রংধনু আসরের অপরূপ পরিবেশনা আমাকে যেন শৈশবে নিয়ে যায়'
মহাশয়, নমস্কার। ৭ সেপ্টেম্বর রেডিও তেহরানের সান্ধ্য অনুষ্ঠানে রংধনুর আসরে "এক কবুতর দম্পতির গল্প" শুনে খুব খুব ভালো লাগল। গাজী আব্দুর রশীদ ও আক্তার জাহানের সুমধুর কণ্ঠে নাট্য রূপের ভঙ্গিমায় অপরূপ পরিবেশনা আমাকে যেন শৈশবে নিয়ে যায়। অনুষ্ঠানটি যদিও শিশু-কিশোরদের জন্য। তবে বড়দের শুনতে মানা নেই।
মনে পড়ে গেল রবীন্দ্র সংগীতের একটি কলি-
"কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা
মনে মনে মেলে দিলেম গানের সুরের এই ডানা।"
সত্যি বলতে কী, রূপকথা বা কল্পকাহিনী আজ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমান বিশ্বে শিশুরা কঠোর বাস্তববাদী। অভিভাবকরাও কেউ কেউ শিশুদের দ্রুত বড়ো করবার মরিয়া প্রচেষ্টায় রত। ফলে স্বপ্নলোক বা কল্পলোক তাদের পছন্দ না। কিন্তু তারা জানেন না অথবা ভুলে গেছেন, আজ যারা শিশু, তারাই আগামী দিনের দেশ গড়ার কারিগরে পরিণত হবে। নেতৃত্ব দেবে দেশ তথা বিশ্বকে। নেলসন ম্যান্ডেলার পর্যবেক্ষণে ছিল- সমাজ শিশুদের প্রতি কী আচরণ করে তার মধ্য দিয়ে সমাজের চেহারাটা ফুটে ওঠে। আসলেই শিশুরা কাদা মাটির মতো। যত্ন দিয়ে না গড়লে তা তারা মাটির ডেলার মতোই পড়ে থাকে। প্রতিমা গড়ে ওঠে না।
আলবার্ট আইনস্টাইনও বলেছিলেন, "জ্ঞানের চেয়ে কল্পনা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ।কারণ জ্ঞান সীমিত যখন কল্পনা সমগ্র বিশ্বকে আলিঙ্গন করে।" যদিও রূপকথা বা কল্পকাহিনী একটি শিশুর বিকাশে সহায়তা করে। তারা বাস্তবতা সম্পর্কে তাদের উপলব্ধিকে প্রভাবিত করতে অক্ষম।
সমস্ত রূপকথা মানুষকে কিভাবে ভালো মানুষ হতে হয় তা জানতে সাহায্য করার চেষ্টা করে। এটি সতর্কতামূলক হতে পারে যেমন 'একটি বইকে এর কভার দ্বারা বিচার করবেন না' বা 'তারা যেই হোক না কেন অন্যদের প্রতি সদয় হোন' এর মতো প্রেসক্রিপটিভ।
রূপকথার গল্পগুলির মধ্যে একটি জিনিস যা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো যেভাবে সেগুলি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রেরণ করা হয়। এটি শুধুমাত্র একটি বই পড়ার প্রক্রিয়া নয়, এটি গল্প বলা এবং শিশুদের আকর্ষিত করার এবং তাদের কল্পনাকে জাগিয়ে তোলার অন্যতম সেরা উপায়।
আগামী দিনে হয়তোবা রূপকথার গল্প কাহিনী এবং নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রংধনু অনুষ্ঠানের উপর ভর দিয়ে আমরা যেতে পারব কল্প লোকে, সেখানে থাকবে নিছক আনন্দের উপাদান, তার ভিতরেই আমরা খুঁজে নিতে পারব বাস্তবকে, অচেনা চেহারায় বাস্তব ধরা দেবে আমাদের সামনে। ধন্যবাদ রংধনুর প্রযোজককে। ধন্যবাদ রেডিও তেহরানকে।
রেডিও তেহরানের বিশ্বের শ্রোতাসমাজ সাগ্রহে তাকিয়ে আছেন রংধনুর প্রযোজকের দিকে। নতুন সৃষ্টি, নতুন স্বপ্ন দেখতে যা শিশু মনকে নাড়া দেবে। বাস্তবের কঠোরতা থেকে মুক্তি দেবে কিছুক্ষণ হলেও। আর তারই মাঝে কিছু নৈতিক শিক্ষা লাভ করবে।
ধন্যবাদান্তে
বিধান চন্দ্র সান্যাল
ঢাকা কলোনী, বালুরঘাট
দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১০