'মজলুম ফিলিস্তিনিদের খবর শুনে আমার হৃদয়টা ডুকরে ডুকরে কেঁদে ওঠে'
জনাব, আসসালামু আলাইকুম। শুরুতেই ফিলিস্তিনের হাজারো শহীদের প্রতি সালাম। লানত জালিম যায়নবাদী ইসরাইলের উপর। রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠানের আমি একজন নিয়মিত শ্রোতা। গত ২২/১০/২০২৩ তারিখের অনুষ্ঠান শুনলাম। বর্তমানে রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান শুনলেও সমস্ত অনুষ্ঠান মনপ্রাণ দিয়ে শোনা সম্ভব হয় না।
রেডিও তেহরানের বিশ্ব সংবাদ ও সংবাদ ভাষ্যের অনুষ্ঠান দৃষ্টিপাতে মজলুম ফিলিস্তিনিদের খবর শোনার পর আমার হৃদয়, আমার আত্মা, সব সময় পড়ে আছে আহত, ক্ষুধার্ত ও স্বজনহারা ফিলিস্তিনি শিশু ও মহিলাসহ সাধারণ জনগণের নিকট। সোস্যাল মিডিয়ায় যখন দেখি অনাহারী আহত শিশু ক্ষুধার তাড়নায় এক খণ্ড রুটি পাওয়ার আশায় ত্রাণ সামগ্রীর প্যাকেটের দিকে করুণ দৃষ্টিতে চেয়ে মুখ নাড়িয়ে চলেছে; যখন দেখি সন্তান হারা মা তার সন্তানের জন্য রাস্তায় রাস্তায় আহাজারি করে বেড়াচ্ছে, যখন দেখি মৃত সন্তানের লাশ কোলে নিয়ে তার অসহায় পিতা ক্রমাগত ক্রন্দন করে চলেছে তখন আমার হৃদয়টা ডুকরে ডুকরে কেঁদে ওঠে। অশ্রু সজল চোখের সামনে ভেসে ওঠে কারবালার সেই বিষাদময় ঘটনা।
শয়তান পামর ইয়াজিদ ইমাম হোসাইন (আ.) ও তাঁর পরিবারকে নিরাপদ জায়গায় ফিরে যেতে না দিয়ে কারবালা প্রান্তরে যেভাবে পানি ও খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, নির্দয় নিষ্ঠুরভাবে আলী আসগরের কচি বুকে বিষাক্ত তীর নিক্ষেপ করে শহীদ করেছিল। ঠিক তেমনিভাবে শয়তান মর্দুদ ইসরাইল ও তার দোসররা গাজায় জ্বালানি, পানি, খাদ্য সামগ্রী ও ওষুধসহ সমস্ত কিছু সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পরে ও নিরাপদ জায়গায় ফিরে যেতে না দিয়ে বোমা নিক্ষেপ করে নিরাপরাধ শিশু ও অসহায় মহিলাদের নির্দ্ধিধায় হত্যা করছে। সেদিনের মতো আজও গুটি কয়েক মুসলিম দেশ ছাড়া সমগ্র মুসলিম জাতিসহ বিশ্ব বিবেক আজ নিশ্চুপ-নির্বাক। কিন্তু কেন? এর একটাই উত্তর আমাদের ঈমানী দুর্বলতা। আল্লাহপাকের পবিত্র বাণীর উপর বিশ্বাসের অভাব। আল্লাহ পাক যেখানে ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জালিমদের সঙ্গে আপোষ না করতে মজলুমদের নির্দেশ দিয়েছেন এবং জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমদের সাহায্য ও সহযোগিতা করার কথা বলেছেন সেখানে এ জামানার অধিকাংশ মুসলমান মজলুম জনগণের পক্ষ না নিয়ে জালিমদের ভয়ে তাদের সাথে আপোষ করার কথা বলছেন।
আহলে বাইতের অন্যতম সদস্য ইমাম মাহদি (আ.)-এর আগমনের মাধ্যমে একদিন ইসলামের বিজয় হবেই এবং সে দিন খুব দূরে নয়- এ কথা ইনারা বিশ্বাস করেন না।
অথচ নবী করিম (সা.) বলেছেন শেষ ত্রাণকর্তা হিসেবে ইমাম মাহদি (আ.)-এর আগমন ঘটবে। এবং সারা বিশ্বে আবারও ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে। মহানবী (সা.) এর জমানায় ইহুদিদের বিরুদ্ধে যে চারটি যুদ্ধ হয়েছিল তার মধ্যে শেষও কঠিন যুদ্ধ ছিল খায়বারের যুদ্ধ। যেখানে মুসলমানরা কিছুতেই জয়লাভ করতে পারছিলেন না। অবশেষে নবীকারিম (স:) বললেন আগামীকাল যার হাতে ইসলামের পতাকা দেওয়া হবে তার দ্বারাই এই যুদ্ধে জয়লাভ হবে। পরের দিন হযরত আলী (আ.) এর হাতে ইসলামের পতাকা তুলে দেওয়া হয় এবং তিনিই বীর বিক্রমে যুদ্ধ করে জয়লাভ করেন।
ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের যুদ্ধে যদিও মুসলমানগণ শহীদ হয়ে যাচ্ছেন তবু্ও আমার মনে হয় আল্লাহপাক খায়বর যুদ্ধের মতো এ যুদ্ধে ও ছাপান্নটি মুসলিম দেশের মধ্যে কোনো একটি দেশকে দিয়ে এই অসম যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় দান করবেন আর সে দেশটি অবশ্যই ইরান হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। ততদিন অবধি মহান আল্লাহ পাক আমাদের ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করুন।
হ্যাঁ, শেষ ত্রাণকর্তা ইমাম মেহেদী (আ.)-এর প্রথম পর্ব খুব ভালো লেগেছে। আগামীতে এই অনুষ্ঠান থেকে শ্রোতাবন্ধুরা অনেক কিছু ই পাবেন বলে মনে করি। আমাদের দুর্বল ঈমানী শক্তি অনেকটাই সবল হবে বলে মনে করি যদি আমরা নিয়মিত এই অনুষ্ঠানটি শুনতে থাকি।
সোনালী সময় অনুষ্ঠান শুনলাম। অত্যধিক হারে টেলিভিশন, ইন্টারনেট, কম্পিউটার ও মোবাইল দেখার অপকারিতা সম্বন্ধে জানলাম। ১৪ থেকে ২৪ বছরের তরুণ সমাজ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত তা যেমন জানতে পারলাম তেমনি কিভাবে এর সঠিক ব্যবহার করা যায় তাও জানতে পারলাম অনুষ্ঠান থেকে। সুন্দর ও মুল্যবান অনুষ্ঠান উপহার দেওয়ার জন্য রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগের সকল কলাকুশলী ও কর্মকর্তাদের জানাই আমার অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় ইতি টানলাম।
শুভেচ্ছান্তে
নিজামুদ্দিন শেখ
সভাপতি, ফেমিলি রেডিও লিসনার্স ক্লাব
গ্রাম: নওপাড়া, পোস্ট: নওপাড়া শিমুলিয়া
থানা: বহরমপুর, জেলা: মুর্শিদাবাদ
পশ্চিম বঙ্গ, ভারত।
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।