শ্রোতাদের মতামত
রেডিও তেহরানের প্রিয়জন ও দর্পন অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত
আসসালামু আলাইকুম। আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানবেন। আজকের এই চিঠিতে রেডিও তেহরানের শ্রোতাপ্রিয় অনুষ্ঠান প্রিয়জন এবং সমসাময়িক বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণমূলক অনুষ্ঠান দর্পন সম্পর্কে মতামত জানাব।
গত ২০ সেপ্টেম্বর, সোমবার রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগ থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে শ্রোতাদের চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জন ছিল অসাধারণ। উপস্থাপনায় ছিলেন গাজী আব্দুর রশিদ, আকতার জাহান ও আশরাফুর রহমান। তাঁদের চমৎকার উপস্থাপনায় প্রিয়জন খুবই ভালো লেগেছে।
চিঠি: প্রিয়জনে ৯ জন শ্রোতার চিঠি ছিল। প্রতিটি চিঠিই ছিল হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় ভরপুর। চিঠি শুনতে শুনতে আর আপনাদের কথা শুনতে শুনতে এক আনন্দঘন জগতে বিচরণ করছিলাম।
প্রিয়জনে আজ যেসব বন্ধুর চিঠি ছিল, তারা হলেন- ১. মোঃ আব্দুল হাকিম ২. আব্দস সালাম সিদ্দিক ৩. শরিফা আক্তার পান্না ৪. শাহজালাল হাজারী ৫. আতিকুল ইসলাম আতিক ৬. ভাস্কর পাল ৭. নজরুল ইসলাম ৮. হারুন অর রশিদ এবং ৯. মোঃ শাহাদত হোসেন
প্রতিবাদ: রেডিও তেহরানের ফেসবুক গ্রুপ ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে। অনেক শ্রোতাই এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এসব প্রতিবাদকারী সাহসী শ্রোতাদের নামগুলো অনুষ্ঠানে জানিয়ে দেয়া হয়। অনেকগুলো নাম, তাই লিখতে পারিনি। তবে যারা ফেসবুকের এরূপ ন্যক্কারজনক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
সাক্ষাৎকার: হাফিজুর রহমান। ভারতের শ্রোতাবন্ধু হাফিজুর রহমানের চমৎকার একটি সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। তার সাক্ষাৎকারটি বাংলাদেশ ও ভারতীয় শ্রোতামহলে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। বিশেষ করে, তার একটি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন ভারতের অনেক শ্রোতা বন্ধু। তিনি ভারতে আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। তার প্রস্তাবের পর ভারতের অনেক বন্ধুই এ কাজে এগিয়ে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা আশা করি, শীঘ্রই ভারতে আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব গড়ে উঠবে।
গান: প্রিয়জনের সবশেষে ছিল একটি গান। দারুণ ভালো লেগেছে গানটি। সুন্দর উপভোগ্য একটি প্রিয়জন উপহার দেয়ায় রেডিও তেহরানকে ধন্যবাদ জানাই।

এদিকে, গতকাল (মঙ্গলবার) প্রচারিত প্রতিটি অনুষ্ঠানই আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে, বেশ ভালো লেগেছে। ওইদিন কথাবার্তার পরই প্রচারিত হয় নিয়মিত সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান দর্পন। সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ে আলোচনা করা হয় এতে। বিশ্লেষণধর্মী এ আলোচনা আমাদের খুব ভালো লাগে। গতকালও ভালো লেগেছে এ কারণে যে, এতে আফগাস্তিান দখলের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেহারা উন্মোচন করে দেয়া হয়েছে।
দর্পনে আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান দখলের প্রেক্ষাপট ও ফলাফল নিয়ে আলোচনা করা হয়। উল্লেখ্য যে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ এক সন্ত্রাসী হামলা হয়। যদিও এ ঘটনায় প্রকৃত দায়ী কে তা আজও স্পষ্ট করে জানা যায়নি। তথাপি এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান দখল করে নেয়। এরপর নানা সুকৌশলে গত ২০ বছর ধরে আফগানিস্তান শাসন করে।
বিগত ২০ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে আছে। কিন্তু এ ২০ বছরে আফগানিস্তানের পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। আইএস বা দায়েশ ঠিকই সেখানে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে গেছে এবং এখনো চালাচ্ছে। অনেকে মনে করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রকৃতপক্ষে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে দমনের পরিবর্তে পরোক্ষভাবে লালন-পালন করেছে, যাতে করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দোহাই দিয়ে আফগানিস্তানকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। লুট করা যায় আফগানিস্তানের মূল্যবান সম্পদ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গেল ২০ বছর ধরে সেখানে অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করলেও তা করেছে নিজেদের সুবিধার্থে। আফগানিস্তানের কল্যাণে তারা একটি ডলারও ব্যয় করেনি। যাদের দরকার ক্ষমতায় বসিয়েছে, যাকে দরকার নেই ছুড়ে দিয়েছে। একদিনে শান্তি ও স্থিতিশীলতার কথা বলেছে, অন্যদিকে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর সাথে আঁতাত করেছে।
বাস্তবতা হচ্ছে পাকিস্তানের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা মাদ্রাসাগুলোর সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দেয়ার ব্যাপারে বিরাট ভূমিকা রয়েছে। এ নিয়ে পাকিস্তানের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টানাপড়েন সৃষ্টি হয়। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদ দমনের কথা বলে আফগানিস্তান দখল করলেও তারা এখন সে দৃষ্টিভঙ্গী থেকে সরে এসেছে। তারা এখন বলছে, যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার মাধ্যমে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায় না।
দেরিতে হলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ বোধোদয়কে আমরা স্বাগত জানাই। আর আশা করি, তাদের এ বোধোদয় যেন মন থেকে হয়, লোক দেখানো না হয়। শান্তি, স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা প্রভৃতি কথা বলে আর কোন দেশে যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেনা না পাঠায়, অজুহাত দেখিয়ে কোন দেশে যেন লুটতরাজ না করে।
সত্যিই দর্পন রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের এক অসাধারণ অনুষ্ঠান। সমসাময়িক জটিল বিষয়কে সহজভাবে শ্রোতাদের মাঝে উপস্থাপন করা হয় এতে। আমি মনে করি, শ্রোতাদের ধ্যান ধারণায় পরিবর্তন আনতে এ অনুষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ধন্যবাদান্তে,
মোঃ শাহাদত হোসেন
সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ
গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ–২৩০০, বাংলাদেশ।
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।