আজ বাহরাইনের স্বৈরসরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন শুরুর ১১তম বার্ষিকী
সৌদি-ইসরাইল সম্মিলিতভাবে বাহরাইনের গণআন্দোলন দমন করছে
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বাহরাইনের স্বৈরাচারী আলে খলিফা সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন শুরুর ১১তম বার্ষিকী। খ্যাতনামা মার্কিন বিশ্লেষক গ্রাহাম ফুলার বাহরাইনে সরকার বিরোধী গণআন্দোলনের পরিস্থিতি সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, 'বর্তমান অবস্থা সবার কাছে একেবারেই স্পষ্ট এবং বিশ্ব যেন বাহরাইনের মুসলমানদেরকে ভুলে গেছে'।
২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলন শুরুর পর বাহরাইনের জনগণ শাসন কাঠামোয় পরিবর্তন বা সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছে। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে আলে খালিফা সরকার সৌদি আরবের সাহায্যে গণআন্দোলন দমন করে যাচ্ছে। সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরুর ঠিক এক মাস পর অর্থাৎ ১৪ মার্চ আলে খলিফার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সৌদি সরকার বাহরাইনের জনগণকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমনের জন্য সেদেশে সেনা পাঠায়। এমনকি আন্তর্জাতিক সমাজও এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি এবং বাহরাইনের মুসলমানদের ন্যায়সঙ্গত দাবি দাওয়ার বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে।
সৌদি আরব বাহরাইনে সেনা পাঠানোর পর ওই দেশটি কার্যত সামরিক শাসনে রূপ নেয় এবং জনগণ ও আলে খলিফা সরকারের মধ্যকার বিরোধ আরো তীব্র আকার ধারণ করে। জনগণের দাবি উপেক্ষা করে বাহরাইন সরকার যে কোনো ধরনের সংস্কারের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে এবং জনগণকে হত্যা, গ্রেফতার, সামরিক আদালতে বিচার এমনকি ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার মতো পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকার বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত অনেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
কিন্তু সরকারের দমন-পীড়ন সত্বেও জনগণের আন্দোলন তো থামেনি বরং আন্দোলন আরো বেগবান হয়েছে এবং সংস্কার আন্দোলন এখন সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এদিকে সময় যতই গড়াচ্ছে ততই বাহরাইনের ব্যাপারে বাইরের হস্তক্ষেপ বাড়ছে। এমনকি সৌদি আরবের পাশাপাশি ইহুদিবাদী ইসরাইলও বাহরাইনের জনগণের আন্দোলন দমনে সহযোগিতা করছে।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাহরাইনের আলে খলিফা সরকার ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এ সংক্রান্ত চুক্তি সইয়ে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বড় ভূমিকা পালন করেন। ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের বিরুদ্ধে বাহরাইনের জনগণ প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। তারা বলে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে আলে খলিফা সরকার নিজেদের বৈধতা অর্জনের চেষ্টা করছে এবং ইসরাইলের সহযোগিতায় গণআন্দোলন দমনের চেষ্টা করছে। এদিকে বাহরাইনে ইসরাইলি দূতাবাসের সামনে জনগণের প্রতিবাদ সমাবেশ এবং ইসরাইল ও বাহরাইনের কূটনীতিকদের আসা যাওয়া অব্যাহত থাকার কারণে আলে খলিফা সরকার আন্দোলন দমনের জন্য নতুন করে ইসরাইলের একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিয়েছেন।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।