লোহিত সাগরে ইসরাইলগামী জাহাজে হামলার কারণ ব্যাখ্যা করল ইয়েমেন
ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ সমর্থিত ইসলামিক স্যালভেশন সরকারের তথ্যমন্ত্রী নাসেরউদ্দিন অমের একটি পশ্চিমা মিডিয়াকে দেয়া সাক্ষাতকারে লোহিত সাগরে ইসরাইলের মালিকানাধীন জাহাজ কিংবা ইসরাইল অভিমুখী অন্য দেশের জাহাজের ওপর ইয়েমেনিদের হামলার লক্ষ্য উদ্দেশ্যের ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন। নিউজউইককে দেয়া ওই সাক্ষাতকারে অমের বলেছেন, "আমাদের সামরিক অভিযান ইসরাইলের সাথে সংশ্লিষ্ট জাহাজের বিরুদ্ধে এবং আমরা এর বাইরে অন্য কোনো জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করিনি।
ইসরাইল যখন গাজায় বর্বর ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা চালাচ্ছে তখন এর প্রতিবাদে ইয়েমেনি সেনারাও লোহিত সাগরের বাব আল-মান্দাব প্রণালীর ওপর দিয়ে ইসরাইলগামী জাহাজকে টার্গেট করেছে। ইয়েমেনের এই কর্মকর্তা আরো বলেছেন, লোহিত সাগরের উপর দিয়ে ইসরাইলগামী জাহাজকে টার্গেট করে হামলার উদ্দেশ্য গাজায় ত্রাণ, খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ করতে ইসরাইলকে বাধ্য করা। গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এ ছাড়া, ইসরাইল গাজায় মানবিক সাহায্য পাঠাতেও বাধা সৃষ্টি করছে।
নাসেরউদ্দিন অমেরের সাক্ষাতকারটি প্রকাশিত হওয়ার আগে রয়টার্স খবর দিয়েছিল যে, বিশ্বের বৃহত্তম শিপিং কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি, মারস্ক শিপিং কোম্পানি জানিয়েছে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে তাদের কনটেইনারবাহী কোনো জাহাজ চলাচল করবে না। মারস্ক শিপিং কোম্পানির মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, ডেনমার্কের কোম্পানি পন্যসামগ্রীবাহী জাহাজ আফ্রিকা হয়ে অন্যত্র পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। তিনি বলেছেন, 'লোহিত সাগরে আমাদের পণ্যবাহী জাহাজে কয়েক দফা হামলার পর, আমরা আদেশ দিয়েছি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের কোনো জাহাজ যেন বাব আল মান্দাব প্রণালী অতিক্রম না করে।'
এ প্রসঙ্গে, ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত ন্যশনাল স্যালভেশন সরকারের তথ্যমন্ত্রী নাসেরউদ্দিন অমের নিউজউইককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লোহিত সাগর পাড়ি দিতে ইচ্ছুক শিপিং কোম্পানিগুলোর উদ্বেগ কমানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন, "আমাদের পক্ষ থেকে, আমরা সমস্ত শিপিং কোম্পানিকে আশ্বস্ত করছি যে তাদের কোনো জাহাজ যদি ইসরাইলি বন্দরে না ভেড়ে তাহলে তাদের কোন ঝুঁকি নেই বা সমস্যা হবে না।" তিনি আরো বলেছেন, সামুদ্রিক টাস্ক ফোর্স গঠনের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের বিবৃতির কারণে লোহিত সাগরে চলাচলকারী শিপিং কোম্পানিগুলোর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ইয়েমেনের তথ্যমন্ত্রী আরো বলেছেন, সামুদ্রিক টাস্ক ফোর্স গঠনে আমেরিকার ঘোষণা ও হুমকির পর এ অঞ্চলে ব্যাপক উত্তেজনা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, ইয়েমেনের সেনাবাহিনী ইসরাইলগামী জাহাজে একের পর এক হামলা চালানোয় ইসরাইল ও তার মিত্ররা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। ইয়েমেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজার জনগণের কাছে মানবিক সহায়তা না পাঠানো পর্যন্ত ইসরাইল অভিমুখী যে কোনো জাহাজের বিরুদ্ধে ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর হামলা অব্যাহত থাকবে।
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।