পশ্চিমা সহায়তা ছাড়া ইসরাইলের পতন বা ধ্বংস খুব অল্প সময়ের ব্যাপার
গাজা যুদ্ধে জয়-পরাজয়ের পাল্লা ও পশ্চিমা সহায়তায় ইসরাইলের টিকে থাকা!
গাজায় প্রায় চার মাস ধরে অব্যাহত রয়েছে ইহুদিবাদী ইসরাইলের গণহত্যা বা জাতিগত শুদ্ধি অভিযান। কিন্তু গাজার যুদ্ধে ইসরাইলের পরাজয় এখন আগের চেয়েও অনেক স্পষ্ট।
ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গত চার দশকে ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনীর যত সেনা নিহত হয়েছে গত চার মাসে তার চেয়েও বেশি ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে।
হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করা ও বন্দিদের হত্যা করা, বিশেষ করে হাজার হাজার শিশু এবং নারী হত্যা কিংবা হাসপাতাল, স্কুল, গির্জা ও আবাসিক বাড়িঘর বোমা মেরে ধ্বংস করার মধ্যে কোনো গৌরব বা বীরত্ব নেই। গতকালও ইসরাইলি রেডিও জানিয়েছে ইসরাইলের একটি বিশেষ বাহিনীর পঞ্চম রিজার্ভ ব্রিগেডকে গাজা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে অথবা তারা পিছু হটেছে।
অথচ ইসরাইল গাজার টানেল বা সুড়ঙ্গগুলোকে সমুদ্রের পানি দিয়ে ভরে দিবে বলে ঘোষণা করেছিল। টানেলগুলোকে এভাবে ধ্বংস ছাড়াও হামাসের সব সেনাকে নির্মূল বা হত্যা করা হবে এবং সব ইসরাইলি বন্দিকে মুক্ত করে গাজার ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও ইসরাইলি শাসকরা আস্ফালন করেছিলেন। ইসরাইলের এইসব লক্ষ্যের কোনো একটিও পূর্ণ হয়নি। বরং ইসরাইল এখন যুদ্ধ-বিরতির আলোচনা জোরদার হয়েছে বলে খবর দিচ্ছে! ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বলেছে তারা যুদ্ধ-বিরতির প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দেখছে এবং এ ব্যাপারে সহযোগী দলগুলোর সঙ্গে শলা-পরামর্শ করছে। হামাস এ ব্যাপারে এক সপ্তাহ পরে মতামত জানাবে বলে ঘোষণা করেছে। ফলে হামাসের জবাবই এখন দখলদার ইসরাইলের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে ইসরাইলকে গণহত্যা চালিয়ে যেতে সহায়তা দেয়ার কারণে ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে স্থানীয় প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর ব্যাপক হামলাও লক্ষণীয়। এমনই এক সাম্প্রতিক হামলায় নিহত হয়েছে ৩ মার্কিন সেনা ও আহত হয়েছে দুই ডজন। এ ছাড়াও লোহিত সাগরে ইয়েমেনের বিপ্লবী সরকারের অনুগত সেনাদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মার্কিন, ব্রিটিশ ও ইসরাইলি জাহাজগুলো। এ পর্যন্ত তারা ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্কিত ত্রিশটিরও বেশি জাহাজে আঘাত হেনেছে- যার কোনো কোনোটি ছিল মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ। ফলে বাণিজ্য ক্ষেত্রে হাজার হাজার কোটি ডলার আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে ইসরাইল ও তার সহযোগী দেশগুলো।
তাই এটা স্পষ্ট যে গাজাকে কেন্দ্র করে প্রতিরোধ অক্ষ ও দখলদার শক্তির মধ্যে যে সংঘাত চলছে তাতে প্রতিরোধ অক্ষই বিজয়ী অবস্থানে রয়েছে। পশ্চিমা নানা সংবাদ মাধ্যম ও বিশ্লেষকরাও এ বিষয়টি স্বীকার করেছে। ইসরাইলি সশস্ত্র-বাহিনীকে যেমন শক্তিশালী মনে করা হত তা এখন কল্প-কাহিনীর মত ম্লান হয়ে গেছে এবং মার্কিন ও পশ্চিমা সহায়তা ছাড়া ইসরাইলের ধ্বংস বা পতন যে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব তাও স্পষ্ট হয়ে গেছে। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/০১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।