যে কারণে ব্যর্থ হলো আরব ন্যাটো গড়ার পরিকল্পনা: মিডল ইস্ট আই
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i152182-যে_কারণে_ব্যর্থ_হলো_আরব_ন্যাটো_গড়ার_পরিকল্পনা_মিডল_ইস্ট_আই
পার্সটুডে- একটি ইংরেজি প্রকাশনা, "দোহা শীর্ষ সম্মেলনে আরব ন্যাটো গঠনের মিশরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান" শীর্ষক এক নিবন্ধে, যৌথ আরব সামরিক জোট গঠনে কায়রোর উদ্যোগ নিয়ে শীর্ষ সম্মেলনে রাজনৈতিক মতবিরোধের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে এবং শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে।
(last modified 2025-09-21T14:11:32+00:00 )
সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫ ১৬:৫৪ Asia/Dhaka
  • • আরব ন্যাটো পরিকল্পনার ব্যর্থতা
    • আরব ন্যাটো পরিকল্পনার ব্যর্থতা

পার্সটুডে- একটি ইংরেজি প্রকাশনা, "দোহা শীর্ষ সম্মেলনে আরব ন্যাটো গঠনের মিশরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান" শীর্ষক এক নিবন্ধে, যৌথ আরব সামরিক জোট গঠনে কায়রোর উদ্যোগ নিয়ে শীর্ষ সম্মেলনে রাজনৈতিক মতবিরোধের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে এবং শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে।

পার্সটুডে জানিয়েছে, দোহা শীর্ষ সম্মেলনে মিশরের উত্থাপিত যৌথ আরব প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠনের উদ্যোগ কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরোধিতার পাশাপাশি মার্কিন হস্তক্ষেপের কারণে ব্যর্থ হয়েছে; এটি এমন একটি ঘটনা যা ইহুদিবাদী ইসরায়েলের মোকাবিলা করার বিষয়ে আরব বিশ্বের গভীর বিভক্তি প্রকাশ করেছে।

মিডল ইস্ট আই ওয়েব সাইটের নিবন্ধে বলা হয়েছে, মিশরীয় পরিকল্পনার প্রধান বিরোধিতাকারী দেশ হচ্ছে কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।

মিশরের প্রস্তাব এবং প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া

দ্য মিডল ইস্ট আই, একজন সিনিয়র মিশরীয় কূটনীতিকের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে মিশরীয় প্রস্তাবটি ১৯৫০ সালের পারস্পরিক প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তির অধীনে উত্থাপন করা হয়েছিল যার লক্ষ্য ছিল সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে বহিরাগত হুমকি, বিশেষ করে ইসরায়েলের হুমকি থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য একটি দ্রুত প্রতিক্রিয়া বাহিনী তৈরি করা। এই কূটনীতিকের মতে, মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে আরব দেশগুলোর কাছে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি এটিকে বিদেশী শক্তির উপর নির্ভরতা কমানোর জন্য একটি প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসাবে উপস্থাপন করেছিলেন।

নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে যে এই ধরনের জোটের নেতৃত্ব কে দেবে তা নিয়ে তখনই মতবিরোধ ছিল। মিশর তার সামরিক অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে জোর দিয়েছিল যে তাদেরই নেতৃত্বাধীন থাকা উচিত, অন্যদিকে সৌদি আরবও এ ধরনের বাহিনীর নেতৃত্ব নিতে চেয়েছিল। এর পাশাপাশি প্রধান বিরোধিতা কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছিল, যারা পরিকল্পনাটি এগিয়ে যেতে বাধা দিয়েছিল।

ব্রিটিশ এই ওয়েব সাইটটি আরও যোগ করে যে বৈঠকের পরপরই, সৌদি আরব পাকিস্তানের সাথে একটি দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। মিডল ইস্ট আই বলেছে যে এ ঘটনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলি আগ্রাসন রোধ করতে কতটা ইচ্ছুক তা নিয়ে আরব দেশগুলোর উদ্বেগেরই প্রমাণ। মিডল ইস্ট আই আরও লিখেছে যে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি "গভীরভাবে হতাশ" হন এবং কায়রো পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হওয়ায় তিনি দোহা ত্যাগ করেছিলেন।  

মার্কিন প্রভাব এবং পর্দার আড়ালে চাপ

মিশরের আরেকজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক মিডল ইস্ট আইকে বলেন যে বৈঠকে মার্কিন প্রভাব ছিল একটি নির্ধারক বিষয়। কাতারি প্রতিনিধিদল ওয়াশিংটন থেকে বার্তা নিয়ে আরব দেশগুলিতে ফিরে আসে, যেখানে জোর দিয়ে বলা হয় যে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে না। মিশরের এই কর্মকর্তার মতে, আমেরিকানরা প্রতিশ্রুতি দেয় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংকট পরিচালনা করবে এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলির বিরুদ্ধে অনুরূপ আক্রমণ চালানো থেকে বিরত রাখবে। মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে যে সংযুক্ত আরব আমিরাত আমেরিকার এই প্রতিশ্রুতিকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি আরও জোর দিয়ে বলেছে যে দোহার বৈঠকের চূড়ান্ত বিবৃতিতে কাতারের উপর ইসরায়েলি আক্রমণের নিন্দা জানানো হয়েছে, কিন্তু এই নিন্দা সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণে কোনো কাজে আসেনি।

মিডল ইস্ট আই আরও একজন বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষককে উদ্ধৃত করে বলেছে যে মিশরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা ইহুদিবাদী ইসরায়েলের সাথে সংঘর্ষের বিষয়ে আরব বিশ্বের মধ্যে গভীর বিভক্তি সৃষ্টি করেছে এবং কায়রোর জন্য বৈঠকের ফলাফলকে একটি গুরুতর ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ আল-সিসি মিশরকে আরব এবং মুসলিম প্রতিরক্ষায় নেতা হিসেবে উপস্থাপন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ছাড়াই বৈঠকটি শেষ হয়েছিল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে যে মিশরের প্রেসিডেন্ট ২০১৪ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলকে "শত্রু" হিসাবে বর্ণনা করেছেন। মিশরে অবস্থিত হামাস নেতাদের ওপর ইসরায়েলি হামলার হুমকি এবং ফিলিস্তিনিদেরকে উত্তর সিনাইতে ঠেলে পাঠানোর হুমকির পর উদ্বেগ প্রকাশকরে কায়রো ইসরায়েলকে শত্রু হিসাবে গণ্য করলো।#

পার্সটুডে/এমআরএইচ/২১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।