বাহরাইনিদের ওপর রাজকীয় জুলুম! এক দিনে ২ জনের ফাঁসির হুকুম!
(last modified Tue, 16 Jun 2020 14:11:27 GMT )
জুন ১৬, ২০২০ ২০:১১ Asia/Dhaka
  • প্রহসনের বিচারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই বাহরাইনি যুবক (ফাইল ছবি)
    প্রহসনের বিচারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই বাহরাইনি যুবক (ফাইল ছবি)

বাহরাইনে ধর্মীয় বৈষম্য ও অবিচারের এবং অন্যায্য দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলায় দেশটির দুই প্রতিবাদী যুবককে একই দিনে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে সেখানকার রাজতান্ত্রিক সরকারের নিয়ন্ত্রিত সুপ্রিম কোর্ট! 

বাহরাইনের বেশিরভাগ জনগণ দেশটির রাজতান্ত্রিক সরকারের পতনের জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেছিল ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। গণ-আন্দোলন এতটাই তীব্র হয়ে উঠেছিল যে সেখানে শান্তিপূর্ণ গণ-বিক্ষোভ দমনের জন্য সেনা পাঠায় সৌদি সরকার। এর বেশ কয়েক বছর আগেও সরকার পতনের গণ-আন্দোলন বেশ জোরদার হয়েছিল। কিন্তু ব্যাপক সামরিক শক্তি ব্যবহার করে এবং জেল-জুলুম ও ফাঁসির মাধ্যমে টিকে আছে বাহরাইনের গণ-ধিকৃত স্বৈরতান্ত্রিক সরকার!

বাহরাইনের সরকার পাশ্চাত্যের তল্পিবাহক ও সেবাদাস হওয়ায় এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা রক্ষা করে চলায় রাজতান্ত্রিক এই সরকারের অবিচার, বৈষম্য এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ কঠোর নির্যাতন ও দমন-পীড়নের খবর খুব একটা প্রচার হয় না পাশ্চাত্যের প্রভাবিত ও সরকার-নিয়ন্ত্রিত বিশ্বের প্রধান সংবাদ মাধ্যমগুলোতে! 

বাহরাইনের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ শিয়া মুসলমান। সেখানে তারা যুগ যুগ ধরে নানা ধরনের বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার। অন্যদিকে স্বৈরতান্ত্রিক রাজা সেখানে গণতন্ত্র বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও ইঙ্গ-মার্কিন শক্তির ক্রীড়নক এবং তাকফিরি-ওয়াহাবি মতবাদের সহযোগী হওয়ায় প্রতিবাদী জনগণের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েও বিশ্ব সমাজের  মূল ধারা ও বড় অংশের পক্ষ থেকেই নিন্দা, প্রতিবাদ ও চাপের মুখোমুখি হচ্ছে না! 

অবশ্য কোনো কোনো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা মাঝে মধ্যে বাহরাইনের জনগণের মুক্তিকামী সংগ্রামীদের ওপর সেখানকার রাজতান্ত্রিক সরকারের দমন-পীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরছে সীমিত মাত্রায়।

বাহরাইনে বিচারের নামে যে প্রহসন চলছে তা এইসব সংস্থার রিপোর্টেও মাঝে মধ্যে উঠে আসছে।

বাহরাইনের রাজতান্ত্রিক আলে খলিফার সরকারের নিয়ন্ত্রিত প্রহসনের আদালত ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত সরকার বিরোধী প্রায় ৪০ জন সংগ্রামীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে। প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার মত কল্পিত ও বানোয়াট অভিযোগ এনে এইসব রায় দেয়া হচ্ছে। আসলে জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি সমর্থন জানানো এবং জনগণের ওপর সরকারের জুলুম ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোই হচ্ছে বাহরাইন সরকারের দৃষ্টিতে ক্ষমার অযোগ্য সর্বোচ্চ অপরাধ! 

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী রাজনৈতিক বন্দিদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে নানা কল্পিত অপরাধে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি আদায়ের অপরাধও করে আসছে বাহরাইনের ক্ষমতাসীন চক্র। 

পশ্চিম এশিয়ার জনগণ যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও ইসরাইলি দখলদারিত্বের মত নানা সংকটের তীব্রতার শিকার তখন বাহরাইনের প্রতিবাদী যুবকদের মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ঘোষণা বিশ্ববাসীর দৃষ্টির আড়ালেই থেকে যাবে বলে আলে খলিফা সরকার আশা করছে। এটা স্পষ্ট জাতিসংঘ ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর নিরবতা তথা পরোক্ষ সমর্থনকে পুঁজি করেই বাহরাইনের গণ-নিন্দিত সরকার প্রতিবাদীদের ফাঁসির হুকুম দেয়ার মত অবিচার অব্যাহত রাখার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১৬