ইসরাইল ও আমিরাতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক মধ্যপ্রাচ্যকে আরো অনিরাপদ করে তুলবে
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i82311-ইসরাইল_ও_আমিরাতের_ঘনিষ্ঠ_সম্পর্ক_মধ্যপ্রাচ্যকে_আরো_অনিরাপদ_করে_তুলবে
ইহুদিবাদী ইসরাইল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা এ অঞ্চলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
(last modified 2025-10-12T12:48:31+00:00 )
আগস্ট ১৬, ২০২০ ১৮:২৩ Asia/Dhaka
  • ইসরাইল ও আমিরাতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক মধ্যপ্রাচ্যকে আরো অনিরাপদ করে তুলবে

ইহুদিবাদী ইসরাইল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা এ অঞ্চলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে ইসরাইল ও আমিরাতের মধ্যে সম্প্রতি যে চুক্তি হয়েছে তারও অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিস্তারের ক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে। ইসরাইলি দৈনিক হেইউম জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গত দুই বছরে দুইবার অতি গোপনে আবুধাবি সফর করেছেন। এ ধরনের গোপন সম্পর্ক দ্বিপক্ষীয় কিংবা পশ্চিম এশিয়ো অঞ্চলে নিরাপত্তা ক্ষেত্রে তেমন একটা প্রভাব পড়েনি। কিন্তু তেলআবিব ও আবুধাবির সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় নিশ্চিতভাবে এ অঞ্চলে এর প্রভাব পড়বে।

বিশ্বাসঘাতকতামূলক ওই চুক্তির অন্যতম একটি খারাপ দিক হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত মধ্যপ্রাচ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের মডেলে পরিণত হতে চায় যা কিনা তেলআবিবের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং আমিরাত আরো বেশি অনিরাপদ হয়ে উঠবে। যদিও তাদের চুক্তির অন্যতম শর্ত হচ্ছে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তাকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।

ইসরাইল ও আমিরাতের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে চুক্তি সইয়ের মাত্র ৭২ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে লিবিয়ায় অবস্থিত আমিরাতের দূতাবাসে হামলা ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। অন্যান্য দেশেও একই ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের অন্যতম শরীক হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ইয়েমেনের বিরুদ্ধে আবুধাবির তৎপরতা বৃদ্ধির পর গত বছর আমিরাতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে এবং ইয়েমেনের যোদ্ধারা আমিরাতে হামলা চালিয়েছিল। এ কারণে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকিকরণ ও ইয়েমেনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আমিরাতের কর্মকর্তাদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। মতবিরোধের জেরে শেষ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাত ইয়েমেন থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয় এবং যুদ্ধে তাদের ভূমিকা কমিয়ে আনে।

এদিকে, ইসরাইলের প্রতি মুসলিম বিশ্বের ক্ষোভ ও ঘৃণা এতটাই বেশি যে, তেলআবিব ও আবুধাবির মধ্যকার সমঝোতা চুক্তির ফলে খোদ আমিরাতের অভ্যন্তরে নিরাপত্তাহীনতা ও শাসকবর্গের মধ্যে মতবিরোধ তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এমন সময় ওই সমঝোতা চুক্তি হয়েছে যখন আমেরিকার সমর্থন নিয়ে দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বর্বর আচরণ ও সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে এবং এ চুক্তির অর্থ হচ্ছে ইসরাইলের অপরাধী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করা।

এ ছাড়া এ চুক্তির ফলে ফিলিস্তিনি দলগুলোর মধ্যেও তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। কারণ এতে ফিলিস্তিনিদের অধিকারের বিষয়টিকেও উপেক্ষা করা হয়েছে এবং তা ফিলিস্তিন বিষয়ক ক্যাম্প ডেভিড চুক্তিরও লঙ্ঘন ও শান্তি বিরোধী। ইসরাইল ও আমিরাতের মধ্যে সমঝোতা হওয়ায় ফিলিস্তিনিরা এটা বুঝতে পেরেছে যে, নিজেদের রক্ষায় আরব দেশগুলোর ওপর আর আস্থা রাখা যায় না। কারণ আরো অনেক আরব দেশের ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার আশঙ্কা রয়েছে। হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরাইলের সঙ্গে আমিরাতের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ফলে আরবদের ঐক্য বিনষ্ট হবে।#    

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৬