তারা এখন শিশুদের দরদি! পাশ্চাত্যের কি কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে?
ইউক্রেনে যুদ্ধ, গাজায় দানবিক বর্বরতা; শিশু-ঘাতক কারা?
পার্সটুডে- গাজার খান ইউনুস-এর আলমাওয়াসি এলাকায় ইসরাইলি সেনাদের বর্বর বোমা বর্ষণে হতাহত হয়েছে ৪০০'রও বেশি বেসামরিক ফিলিস্তিনি।
ইউক্রেন ও গাজার যুদ্ধ বিশ্বের দুই প্রধান আলোচিত ইস্যু। গাজায় ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ এবং নারী ও শিশুসহ বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ আর ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়ে তুলনামূলক বক্তব্য আসছে ভার্চুয়াল বা ইন্টারনেট মাধ্যমে।
উত্তর আটলান্টিক সামরিক জোট ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটের সদস্য করার চেষ্টা করায় যুদ্ধ শুরু করে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করার পদক্ষেপ ইউরোপীয় জোট ও রাশিয়ার মধ্যকার সমঝোতার খেলাপ এবং এ বিষয়টি ইউক্রেনে রুশ অভিযানের পথ খুলে দেয়।
ইউক্রেনের যুদ্ধ দেশটির ২০ শতাংশ অঞ্চলেই সীমিত। কিন্তু ইহুদিবাদী ইসরাইল গোটা ফিলিস্তিন দখল করে রেখেছে প্রায় ৭৫ বছর ধরে। ইসরাইল বছরের পর বছর ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে অসম যুদ্ধ। এ বিষয়ে পুইয়ান নামের এক ব্যক্তি সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন:
রাশিয়া কখনও ইসরাইলের মত যুদ্ধ করেনি। ইউক্রেনও কখনও গাজার মত অবরুদ্ধ ছিল না। ন্যাটো ও পাশ্চাত্য যদি ইউক্রেনের প্রতি এত ব্যাপক সহায়তা না দিত তাহলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট প্রথম দিনই যুদ্ধ পরিত্যাগ করতেন। তাই এ দুয়ের তুলনা করা ঠিক নয়। তবে তুলনা করুন হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার পরিবারের কয়েকজন শহীদ হয়েছেন এবং জেলেনস্কির পরিবারের কয়েকজন নিহত হয়েছেন?

এটা স্পষ্ট ইউক্রেনের নিহত ব্যক্তিদের বেশিরভাগই সামরিক বাহিনীর। অন্যদিকে গাজার প্রায় সাড়ে ৩৮ হাজার শহীদ ও প্রায় ৯০ হাজার আহতের প্রায় সবাই হলেন বেসামরিক ও তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, গাজায় কয়েক মাসের সেনা অভিযানে নিহতদের প্রায় সবাই বেসামরিক এবং তাদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী। আর তাদের সংখ্যা রুশ অভিযানে নিহতদের সংখ্যা ও এমনকি গত দশ বছরে এবং ইউক্রেনে ২০১৪ সালের অভ্যুত্থানে নিহতদের মোট সংখ্যার চেয়েও বেশি।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা করছে মার্কিন সরকার ও পাশ্চাত্য এবং মার্কিন সরকার ও পাশ্চাত্য ইসরাইলকেও সহায়তা দিচ্ছে। একজন ইউজার সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন: রাশিয়া ও মার্কিন সরকারের মধ্যে পার্থক্য হল রাশিয়া নিরপরাধ ব্যক্তিদের হতা করছে না, কিন্তু মার্কিন সরকার ও ন্যাটো শিশুদের হত্যা করছে। মাকিন সরকার ও ইসরাইল গাজায় অপরাধযজ্ঞে জড়িত। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের ওপর নিষেধাজ্ঞা নেই। মার্কিন সরকার চায় যুদ্ধ দীর্ঘ হোক এবং আফগানিস্তানের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক রাশিয়ার জন্য।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হামলার বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করছে হতাহতদের সংখ্যাসহ, কিন্তু ইসরাইল গাজায় তার অপরাধযজ্ঞ ঢেকে রাখছে এবং এসব অপরাধের সঙ্গে হামাসের সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করছে!

এক্স-এর একজন ইউজার লিখেছেন: যারা গাজার হাসপাতালে ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে হামাসের ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্ফোরণ বলে দাবি করছে তারাই বলছে রাশিয়া ইউক্রেনের হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করেছে! তারা এখন শিশুদের দরদি! পাশ্চাত্যের কি কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে?

ফিলিস্তিনি বন্দিদের সঙ্গে ইসরাইলের নৃশংস আচরণের কিছু কিছু বর্ণনা ফাঁস হয়েছে। সম্প্রতি ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া একজন ফিলিস্তিনি বন্দি ফারাজ আসসামুনি বলেছেন, দখলদাররা কেবল শারীরিক নির্যাতন নয় মানসিক নির্যাতনও চালাচ্ছে। ওদিকে ইউক্রেনের পক্ষে যুদ্ধরত চজেন কোম্পানির সদস্যরা প্রায়ই রুশ বন্দিদের হত্যা করছে বলে মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস সম্প্রতি খবর দিয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে উপস্থিত একজন জার্মান চিকিৎসকের বরাত দিয়ে। এই কোম্পানি যুদ্ধ অপরাধে জড়িত বলে ওই চিকিৎসক লিখেছেন। #
পার্সটুডে/১৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।