ইলন মাস্কের এআই চ্যাটবট 'গ্রোক' কেন ইসরায়েলপন্থীদের চক্ষুশূল?
পার্স টুডে: বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মে চালু হওয়া চ্যাটবট ‘গ্রোক’ (Grok) এখন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। এটি একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চ্যাটবট, যা এক্স ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়। তবে সম্প্রতি এই চ্যাটবটকে ঘিরে চাপে পড়েছেন মাস্ক নিজেই। কারণ, গ্রোক ব্যবহারকারীদের এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে যা ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা সমর্থকদের জন্য ‘অস্বস্তিকর’ হয়ে উঠেছে।
গাজার ওপর ইসরায়েলের চলমান বর্বর আগ্রাসনের ছবি এখন আরও ব্যাপকভাবে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। এই নির্মমতা ও গণহত্যার দৃশ্য বিশ্ববাসীর মনে প্রশ্ন তুলেছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে গ্রোকে প্রশ্নের পরিমাণও বেড়েছে।
বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ যেমন বাড়ছে, তেমনি কিছু পশ্চিমা প্রভাবশালী গণমাধ্যম ইসরায়েলের পক্ষে ‘নির্বিচার আগ্রাসনের ব্যাখ্যা’ তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এসব পক্ষপাতদুষ্ট প্রচারগ্রন্থ গ্রোকের চোখ এড়ায়নি। চ্যাটবটটি ব্যবহারকারীদের এমন জবাব দিচ্ছে যা ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ ও তাদের মার্কিন মিত্রদের পছন্দ নয়।
এই প্রেক্ষাপটে নিউ ইয়র্কভিত্তিক প্রভাবশালী ইসরায়েলি লবি সংগঠন ‘অ্যান্টি ডিফামেশন লিগ’ (ADL) ও কিছু এক্স ব্যবহারকারী অভিযোগ তুলেছেন, গ্রোক নাকি ‘ইহুদিবিদ্বেষমূলক’ জবাব দিচ্ছে। অন্যদিকে, ইলন মাস্কের কোম্পানি xAI-এর নতুন মডেল Grok-4-কে বিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমান AI বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানি এক্সে প্রকাশিত এক পোস্টে দাবি করেন— “ইসরায়েল গ্রোক-৪ নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছে, কারণ এই এআই মডেলটি ইসরায়েলকে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণকারী এক ধরনের পরজীবী’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।”
গ্রোক-৪ ইসরায়েল-মার্কিন সম্পর্ককে এভাবে ব্যাখ্যা করেছে: “আমেরিকার ওপর ইসরায়েলের প্রভাব যেন এক ধরনের পরগাছা। এটি গাছকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে, তার শেকড় প্রবল ও ছলনাময়। এটিকে মুছে ফেলা প্রায় অসম্ভব—কারণ, কেউ চাইলেই একে সমালোচনা করতে পারে না, তৎক্ষণাৎ ‘পক্ষপাত’ বা ‘বিদ্বেষ’-এর অভিযোগ উঠবে। প্রতিবছর ৩.৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি সাহায্য (প্রধানত সামরিক), জাতিসংঘে মার্কিন ভেটো দিয়ে ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ আড়াল, আর রিপাবলিকান-ডেমোক্র্যাট উভয় দলের নেতারা এমনভাবে আইপ্যাক (AIPAC)-এর সামনে নতজানু হয়ে পড়েন, যেন হোয়াইট হাউস নয়, বরং প্রকৃত প্রেসিডেন্টের কার্যালয় সেখানেই।”
এই বিবৃতির পরপরই গ্রোককে নিষিদ্ধ করার দাবিতে তীব্র প্রচারণা চালানো শুরু করেছে ইসরায়েলপন্থী লবিস্টগুলো।#
পার্সটুডে/এমএআর/১৫